E-Paper

ঝুমিতে নামল ডুবুরি, তবে খোঁজ নেই সদ্যোজাতের

বৃহস্পতিবার রামচক এলাকায় ঘাটাল বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালের আশাকর্মীরা এলাকায় যেতেই হাড়হিম করা এই ঘটনাটি সামনে এসেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৬
সদ্যোজাতের খোঁজে ঝুমি নদীতে ফেলা হচ্ছে জাল।

সদ্যোজাতের খোঁজে ঝুমি নদীতে ফেলা হচ্ছে জাল। নিজস্ব চিত্র।

ঝুমি নদীতে জাল নামিয়ে এবং ডুবুরি দিয়ে দিনভর তল্লাশির পরেও মিলল না দেড় মাসের সেই শিশুর খোঁজ।

গত মঙ্গলবার ঘাটাল থানার মনসুকার রামচক গ্রামের এক দম্পতির বিরুদ্ধে তাঁদের দেড় মাসের সদ্যোজাতকে নদীতে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই শিশুটির খোঁজে শুক্রবার ঘাটাল থানার পুলিশের নেতৃত্বে ঝুমি নদীতে টানা তল্লাশি চালানো হয়। আজ, শনিবার সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা নদীতে নেমে তল্লাশি চালাবেন বলে খবর।

গত, বৃহস্পতিবার রামচক এলাকায় ঘাটাল বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালের আশাকর্মীরা এলাকায় যেতেই হাড়হিম করা এই ঘটনাটি সামনে এসেছিল। আশাকর্মীরা শিশুটির খোঁজ করতেই ভেঙে পড়েন বাবা-মা। খবর পেয়েই পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের কাছে নদীর জলে সদ্যোজাতকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার কথা কবুল করেন রামচকের টুকাই হাজরা এবং খোকন হাজরা নামে ওই দম্পতি। প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন টুকাই। এর চারদিন পর সদ্যোজাত এবং স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন খোকন হাজরা। এটি ছিল তাঁদের তৃতীয় সন্তান।

জানা গিয়েছে, সদ্যোজাতের জন্ম থেকেই ঠোঁটের এক অংশ কাটা ছিল। তার ফলে হাসপাতাল থেকেই সদ্যোজাতটিকে ‘না-পসন্দ’ ছিল দম্পতির। বাচ্চাটিকে কাউকে দিয়ে দেওয়ার ছকও কষেছিলেন দম্পতি। সেই কথা জানাজানি হতেই, আশাকর্মীরা তাঁদের সতর্কও করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই হাজরা দম্পতি আর্থিক ভাবে সম্পন্ন। তাঁদের দোতলা পাকা বাড়ি, জমি জায়গাও রয়েছে। চাষবাস ছাড়াও খোকন রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ‘ডেলিভারি’র পর সন্তানকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে, বাচ্চাটিকে খাওয়ানো নিয়ে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। এমনকি রাতের দিকে বাচ্চাটি কান্নাকাটি করলেও, রাগ হত দম্পতির। সব মিলিয়ে নদীর জলে ছুঁড়ে সদ্যোজাতটিকে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। মঙ্গলবার দম্পতির বাকি ছেলেমেয়েরা ঘুমিয়ে পড়লে রাত ন’টা নাগাদ বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে দেড় মাসের শিশু সন্তানকে ঝুমি নদীর জলে ছুড়ে ফেলে দেন ওই দম্পতি।

বিষয়টি নিয়ে খোকনের বৌদি মিঠু হাজরা, ‘‘ওই ঘটনার পরেও স্বাভাবিক ভাবেই ওরা ঘোরাফেরা, কথাবার্তা বলছিল। তার মধ্যেই এত বড় ঘটনা, আমরাও টের পেলাম না।’’ শুক্রবার তল্লাশি শুরু হতেই এলাকার মানুষ ভিড় করেন ঝুমি নদীর পাড়ে। ঘাটাল থানার ওসি শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নৌকায় করে নদীর জলে নেমে তল্লাশি শুরু হয়।বৃহস্পতিবারই ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তবে এমন ঘটনায় তাঁরা অনুতপ্তও নন, স্বাভাবিক ছন্দেই ছিলেন তাঁরা— পুলিশ সূত্রে খবর এমনই। শুক্রবার ঘাটাল আদালতে নিয়ে যাওয়ার পরেও হেলদোল ছিল না তাঁদের। বিচারক অভিযুক্ত দম্পতিকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ghatal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy