Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শসা খেতে হস্তিনীর দেহ

বৃহষ্পতিবার সকালে গড়বেতা ১ ব্লকের আমলাগোড়া অঞ্চলের মাগুরাশোলে শসা খেতের পাশে পূর্ণবয়স্ক এক হস্তিনীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রথা: শসা খেতের পাশে পড়ে হস্তিনীর দেহ। গড়বেতার আমলাগোড়ায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

প্রথা: শসা খেতের পাশে পড়ে হস্তিনীর দেহ। গড়বেতার আমলাগোড়ায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গড়বেতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

কয়েকদিন আগে ঝাড়গ্রামে হাতির মৃত্যুর রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে ফের হাতির মৃত্যুসংবাদ। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়।

বৃহষ্পতিবার সকালে গড়বেতা ১ ব্লকের আমলাগোড়া অঞ্চলের মাগুরাশোলে শসা খেতের পাশে পূর্ণবয়স্ক এক হস্তিনীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই বন দফতরের আমলাগোড়া রেঞ্জে খবর দেন। পৌঁছন বনকর্মী ও বন দফতরের আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। এ দিন বন দফতরের চিকিৎসক দল মৃত হস্তিনীর দেহ এক প্রস্থ পরীক্ষা করে দেখেছেন। তবে কী কারণে তার মৃত্যু হল তা পরিষ্কার হয়নি।

মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করে বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পুরো বিষয়টিই খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্ত হবে। সেই রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে।’’ এই মৃত্যু কি অস্বাভাবিক? ডিএফও-র জবাব, ‘‘স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই বলা যাবে।’’

কয়েকদিন আগেই শালবনি, গোয়ালতোড়ের জঙ্গল ঘুরে ৫০-৫৫টি হাতির একটি বড় দল আমলাগোড়ার মাগুরাশোলের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। দলে ১৮-২০ টি শাবকও রয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মাগুরাশোল জঙ্গলের কিছুটা দূরে শসা খেতের পাশে যে হস্তিনীর দেহ পাওয়া গিয়েছে সেটিও ওই বড় দলেরই সদস্য ছিল। তবে তার দেহে কোনও ক্ষত বা আঘাতের চিহ্ন ছিল না। আশেপাশে কোথাও হাইটেনশন বিদ্যুতের তারও নেই।

সে ক্ষেত্রে হস্তিনীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসছে একাধিক সম্ভাব্য ব্যাখ্যা। বন দফতরের এক হাতি বিশেষজ্ঞ এ দিন মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করে বলেন, ‘‘হস্তিনীটির বয়স ৩০-৩৫ বছর। কিছুদিন আগেই সে শাবক প্রসব করেছে। বয়সজনিত কারণে এমনিতেই কিছুটা দুর্বল ছিল বলে মনে হয়। এই অবস্থায় অনেক সময় অতিরিক্ত খেয়ে নেওয়ায় বদহজম হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা থাকে।’’ এ ছাড়া ফসল রক্ষায় কৃষকেরা অনেক সময় খেতে কীটনাশক দেন। সেই কীটনাশক খেয়ে বা হাতিদের নিজেদের মধ্যে লড়াইয়েও এই মৃত্যু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় মাগুরাশোল গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘‘জঙ্গলে হাতি আসায় আমরা রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছিলাম, হাতিদের মধ্যে লড়াই হলেও চিৎকার শোনা যেত, এক্ষেত্রে কিন্তু কোনও আওয়াজও পাওয়া যায়নি।’’

খেতের পাশে পড়ে থাকা মৃত হস্তিনীকে দেখতে এ দিন মাগুরাশোল ও আশেপাশের গ্রামের প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। অনেকে ফুল, মালা দিয়ে, পায়ে আলতা পড়িয়ে, ধূপ জ্বেলে প্রণাম সারেন। ময়না তদন্তের জন্য হস্তিনীর দেহ অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তারপরই শেষকৃত্য হবে। এ দিন ঘটনাস্থলে ডিএফও ছাড়াও ছিলেন বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের এডিএফও কৃষ্ণপ্রসাদ শিকদার, এসিএফ তিয়াস ভঞ্জ প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Garbeta Elephant Body Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE