E-Paper

উত্তাল কংসাবতীতে ফের প্লাবনের শঙ্কা, ভেঙেছে সাঁকো

পুজোর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পাঁশকুড়ার মোট চার জায়গায় কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়। সেই জলে এখনও ভাসছে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের একাধিক গ্রাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩০
কংসাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে পাঁশকুড়ার জানাবাড়ে ডুবে গিয়েছে জল জীবন জল মিশন প্রকল্প এলাকা।

কংসাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে পাঁশকুড়ার জানাবাড়ে ডুবে গিয়েছে জল জীবন জল মিশন প্রকল্প এলাকা। নিজস্ব চিত্র।

কংসাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে রবিবার নতুন করে প্লাবিত নদী চরের কৃষিকাজ। সেই সঙ্গে একাধিক জায়গায় বাঁশের সাঁকো ভেঙে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ফলে পুজোর আগে থেকে বন্যার জেরে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, ময়নার মানুষের যে দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল তা শেষ হওয়ার নাম নেই। নতুন করে নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় পাঁশকুড়ায় ফের বন্ধ জল জীবন জল মিশন প্রকল্পের কাজ। পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে নতুন বাঁধের নীচের অংশ দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করেছে এলাকায়।

পুজোর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পাঁশকুড়ার মোট চার জায়গায় কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়। সেই জলে এখনও ভাসছে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের একাধিক গ্রাম। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো লক্ষ্মীপুজোর পরে ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অতি ভারী বৃষ্টি হয় পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক এলাকায়। যার জেরে শনিবার রাত থেকে কংসাবতী নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করে। জলস্তর বিপদসীমার নীচে থাকলেও যেহেতু ইতিপূর্বে বানভাসি এলাকগুলিতে এখনও বাঁধ তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি তাই কংসাবতীর জলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পাঁশকুড়াবাসীর মনে।

রবিবার পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে নির্মিয়মাণ বাঁধের নীচ দিয়ে পাঁশকুড়া শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জল ঢুকতে শুরু করে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষ। মুরশেদ মল্লিক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,"নদীর জল বেড়ে গিয়ে নতুন বাঁধের ফাঁক দিয়ে এলাকায় জল ঢুকছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পুকুরে জল উপচে পড়ছে। এ বছর এই নিয়ে তিন বার আমরা বন্যার কবলে পড়তে চলেছি।" গত মাসের প্লাবনে পাঁশকুড়ার জানাবাড়ে জল জীবন জল মিশন প্রকল্পের কাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার পর জল কমে যাওয়ায় নতুন করে কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু রবিবার নদীর জল বেড়ে গিয়ে নতুন করে প্লাবিত হয় প্রকল্প এলাকা। প্রকল্প এলাকা থেকে কাজের যন্ত্রপাতি তুলে নেওয়া হয়। নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় পাঁশকুড়ার বহু জায়গায় নদী চরের কৃষিকাজ নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়েছে।কংসাবতী নদীর জলস্রোতে ময়না ব্লকের চারটি জায়গায় কংসাবতী নদীর উপর থাকা বাঁশের সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। রবিবার সকাল ৯ টা নাগাদ ময়নার রামচন্দ্রপুর ও প্রজাবাড়ের কাছে পাঁশকুড়ার সঙ্গে সংযোগকারী দু’টি বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। এর পর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ময়নার দোবান্দি ও শ্রীকণ্ঠা এলাকার কাছে তমলুক ব্লকের সঙ্গে সংযোগকারী আরও দু’টি বাঁশের সাঁকো ভাঙে। সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের তমলুক, পাঁশকুড়া-সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। পাঁশকুড়ার মাগুরিতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে বন্ধ হয়ে যায় পারাপার। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর মাসে ময়নার রামচন্দ্রপুর, প্রজাবাড়, দোবান্দি, শ্রীকনঠা ও পুরষাঘাটের কাছে মিলিয়ে পাঁচটি বাঁশের সাঁকো ভেঙে গিয়েছিল। এরমধ্যে পুরুষাঘাট বাদে বাকি চার জায়গাতেই ফের বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কিছুদিন আগে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছিল। কিন্তু রবিবার ফের সেই সব সাঁকো ভেঙে গিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tamluk Panskura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy