Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিবাদের জের, কিশোরীকে মারধরের নালিশ, অভিযুক্ত জামাইবাবুর পরিজনেরা

পারিবারিক বিবাদের জেরে এক কিশোরীকে মারধরের অভিযোগ উঠল জামাইবাবুর পরিজনেদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পটাশপুর-২ ব্লকের জক্তি গ্রামের ঘটনা। যদিও শনিবার ওই ঘটনায় শেখ সেরাজুল তাঁর মেয়ের জেঠা শ্বশুর শেখ রেয়াজুল, তাঁর স্ত্রী সালেহা বিবি ও দুই ছেলে শেখ রবিউল ও শেখ সনুর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। রুবিনা খাতুন নামে ওই কিশোরী এগরা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০০:২৩
Share: Save:

পারিবারিক বিবাদের জেরে এক কিশোরীকে মারধরের অভিযোগ উঠল জামাইবাবুর পরিজনেদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পটাশপুর-২ ব্লকের জক্তি গ্রামের ঘটনা। যদিও শনিবার ওই ঘটনায় শেখ সেরাজুল তাঁর মেয়ের জেঠা শ্বশুর শেখ রেয়াজুল, তাঁর স্ত্রী সালেহা বিবি ও দুই ছেলে শেখ রবিউল ও শেখ সনুর নামে অভিযোগ দায়ের করেন। রুবিনা খাতুন নামে ওই কিশোরী এগরা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে এগরার এসডিপিও সমীর বসাক বলেন, ‘‘বিবাদ থেকেই দুই পরিবারের লোকদের মধ্যে গোলমাল হয়। অভিযোগপত্রে সেটিই লেখা রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জক্তি গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি শেখ সেরাজুল ও শেখ রেয়াজুলের। সেরাজুলের ছয় মেয়ে ও এক ছেলে। বছর কয়েক আগে সেরাজুলের মেয়ে গুলশানার সঙ্গে রিয়াজুলের ভাইয়ের ছেলে শেখ হাশিবুলের বিয়ে হয়। কয়েকদিন আগে সেরাজুলের সাইকেল নিয়ে যায় জামাই। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাইকেল আনতে দিদির বাড়ি যায় সেরাজুলের ছোট মেয়ে মানোয়ারা খাতুন। সেই সময় রেয়াজুল ও তাঁর বাড়ির অন্যরা মিলে মানোয়ারাকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। সেই সময় মাঠে চাষের কাজে গিয়েছিলেন হাশিবুল। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে বাপের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানায় গুলশানা। সেই সময় সেরাজুল বাজারে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে সেরাজুলের স্ত্রী ওরিমল বিবি, আর এক মেয়ে রুবিনা খাতুন ও ছেলে শেখ মনজিলা ঘটনাস্থলে যায়। ওরিমল বিবিকেও গালিগালাজ ও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বছর চোদ্দোর রুবিনাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হলে জ্ঞান হারায় সে। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরতে থাকে।

গোলমালের আওয়াজ শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় অভিযুক্তরা। স্থানীয়রাই রুবিনাকে প্রথমে প্রতাপদিঘি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রুবিনাকে এগরা মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রুবিনাকে এগরা থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ভর্তি ছিল রুবিনা। শুক্রবার সকালে তার মাথার স্ক্যান করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর মাথার পিছনে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। তাই রুবিনাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। যদিও কলকাতায় না নিমৃতার শাশুড়ি-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় । স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তারপর থেকেই দুই পরিবারের তিক্ততার সূত্রপাত।

শনিবার দুপুরে পটাশপুর থানায় ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেন সেরাজুল। পুলিশই রুবিনাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেয়। এ দিন প্রথমে রুবিনাকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। হাশিবুল জানান, সেখানে চিকিৎসকেরা রোগীর অবস্থা গুরুতর বলে জানান। তবে রোগীকে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মতো রুবিনাকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাঙুরেও চিকিৎসকেরা রোগীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে জানান, রোগীর মাথায় কোনও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। তবে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। তবে বেড ফাঁকা না থাকায় রুবিনাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। তারপর কলকাতার এনআরএস ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও বেড ফাঁকা না পেয়ে রবিবার ভোরে রুবিনাকে নিয়ে পটাশপুরে ফিরে আসে পরিজনেরা। হাশিবুলের দাবি, পটাশপুর থানার মধ্যস্থতায় রুবিনাকে ফের এগরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এগরা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার হিমাংশুশেখর মাইতি বলেন, ‘‘রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল। রোগীকে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আশা করছি, ওষুধেই রোগীর মাথার পিছনে জমাট বাঁধা রক্ত ঠিক হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE