ক্যামেরায় ধরা পড়া হাতির ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
হাতির গতিবিধি জানতে পরীক্ষামূলক ভাবে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে বসানো হয়েছে ক্যামেরা। তাতে হাতির যাতায়াতের ছবিও উঠেছে। এর ফলে হাতির গতিবিধি তৎক্ষনাৎ জানা যাবে। হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুও কমবে। এমনই দাবি বন দফতরের।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, দক্ষিণবঙ্গে এমন ক্যামেরা এই প্রথম বসানো হয়েছে। জাপানের ‘জাইকা’ নামে একটি সংস্থার সহযোগিতায় ধাপে ধাপে হাতির করিডরগুলিতে এই ক্যামেরা বসবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে আরও ২৫টি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। উন্নত মানের ওই ক্যামেরার সাহায্যে গ্রামের মানুষের কাছে সতর্ক বার্তাও পাঠানো যাবে। এর ফলে হাতি ও মানুষের সংঘাত অনেকটাই কমবে।
গত আর্থিক বর্ষে ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর ডিভিশন মিলিয়ে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল হাতির হানায়। এরমধ্যে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনেই মারা গিয়েছেন ২৮ জন। চলতি বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জঙ্গল রাস্তায় যাতায়াতের সময়ে সময় হাতির মুখোমুখি হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় হাতির তাণ্ডবের জেরে প্রচুর বাড়ি ঘরও ভেঙেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চাষিরা। গত বছর হাতির তাণ্ডবে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গত আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে প্রায় ৪ হাজার চাষি ক্ষতিপূরণের জন্য বন দফতরে লিখিত আবেদন করেছিলেন।
এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে ওই ক্যামেরা। এমনই মনে করছে বন দফতর। ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যামেরাগুলি তৈরি হয়েছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গল এলাকাতেই ক্যামেরা বসানো হবে। ক্যামেরার সামনে হাতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কতামূলক বার্তা ফোনে চলে যাবে। এর ফলে হাতির হানা থেকে রেহাই পাবেন সাধারণ মানুষজন। মানুষের প্রাণ ও বাড়ি-ঘর বাঁচানো আমাদের মূল লক্ষ্য। হাতি সব সময় একই জায়গায় থাকে না। তারা কোন পথে যাচ্ছে এই ক্যামেরার মাধ্যমে তা স্পষ্ট জানা যাবে।’’জানা গিয়েছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি আপাতত ঝাড়গ্রাম রেঞ্জ এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে চারটি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির হওয়ায় রাতেও স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে ওই ক্যামেরায়। ওই ক্যামেরার সঙ্গে যে যে মোবাইল নম্বর যুক্ত করা রয়েছে তাতে ছবি ও তথ্য পৌঁছে যাবে। কোনও জায়গায় হাতির উপস্থিতি সঙ্গে সঙ্গে জানা গেলে গ্রামগুলিকে আরও সতর্ক করা যাবে। এতদিন সাধারণ মেসেজের মাধ্যমে বন দফতরের পক্ষ থেকে হাতির গতিবিধি প্রতিদিন সকালে জানানো হয়। কিন্তু হাতি তো এক জায়গায় অবস্থায় করে না। ফলে বন দফতরের পাঠানো মেসেজে হাতির যে অবস্থান থাকে পরে তা অনেক সময়েই বদলে যায়। নতুন ক্যামেরা লাগানোর ফলে সেই সমস্যা থাকছে না। ঝাড়গ্রামের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী মানছেন, ‘‘এখন পরীক্ষামূলক ভাবে চারটি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy