Advertisement
০৫ মে ২০২৪
নেপুরায় পড়ে নতুন ঘর

ভাঙাচোরা অঙ্গনওয়াড়িতেই ক্লাস

নতুন ঘর তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। তা-ও পুরনো ঘরেই গাদাগাদি করে পঠনপাঠন চলছে অঙ্গনওয়াড়িতে। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। শৌচাগার নেই। নেই রান্নাঘরও।

ভাঙা বাড়ির সামনে এক চিলতে জমিতেই চলছে শরীর চর্চা। (ইনসেটে) নতুন ভবন।—রামপ্রসাদ সাউ

ভাঙা বাড়ির সামনে এক চিলতে জমিতেই চলছে শরীর চর্চা। (ইনসেটে) নতুন ভবন।—রামপ্রসাদ সাউ

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০০:৪১
Share: Save:

নতুন ঘর তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। তা-ও পুরনো ঘরেই গাদাগাদি করে পঠনপাঠন চলছে অঙ্গনওয়াড়িতে। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। শৌচাগার নেই। নেই রান্নাঘরও।

মেদিনীপুর সদর ব্লকের কঙ্কাবতীর নেপুরার এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাড়িটি জরাজীর্ণ। পরিস্থিতি দেখে পাশে নতুন ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বছর খানেক হল সেই ভবনদেখতে বছর ঘুরতে চলল। তা-ও পুরনো ঘরেই অব্যবস্থার মধ্যে পঠনপাঠন চলে। গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, এ জন্য প্রশাসনের অদূরদর্শিতা এবং পরিকল্পনাহীনতাই দায়ী। কথা ছিল, নতুন ঘর তৈরি হলে সেখানেই কেন্দ্রটি সরিয়ে আনা হবে।

কিন্তু তা হয়নি কেন? মেদিনীপুর (সদর)-এর বিডিও ঋত্বিক হাজরার জবাব, ‘‘এটা হওয়ার কথা নয়। কী হয়েছে দেখছি।’’

নেপুরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রোজ প্রায় ৩০-৩৫ জন কচিকাঁচা আসে। আসেন এলাকার গর্ভবতী মহিলারাও। চন্দনা ঘোষ, রেবতী মাঝিরাও বলছেন, ‘‘দ্রুত নতুন অঙ্গনওয়াড়ি উঠে গেলেই ভাল।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরই বেহাল দশা। অনেক কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। হয় সেগুলো ভাড়া বাড়িতে চলছে, নয়তো ক্লাব বা গাছতলায়। মূলত, এলাকার কচিকাঁচা এবং গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টিকর খাবার এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয় এই কেন্দ্র থেকে। নেপুরায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু হয় ২০০৩ সালে। বাধাই, নেপুরা, চৈতা প্রভৃতি এলাকার কচিকাঁচারা এখানে আসে। সেই ২০০৩ থেকেই কেন্দ্রটি চলছে স্থানীয় একটি পুরনো বাড়িতে। নিজস্ব ভবন না থাকলে সমস্যা অনেক। সব দিক দেখে এখানে নতুন ঘর তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। উদ্যোগ নেয় মেদিনীপুর সদর পঞ্চায়েত সমিতি। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হয়। নতুন ঘর তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের জুনে। শেষ হয় ওই বছরের অগস্টে। অথচ, এখনও নতুন ঘরটি চালু হয়নি। নীল- সাদা রঙ হয়ে পড়ে রয়েছে।

মেদিনীপুর শহর ছাড়িয়ে কিছু দূর গেলেই কঙ্কাবতী। সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই রয়েছে নেপুরা। এলাকায় গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের বসবাসই বেশি। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, জনা কয়েক শিশু শিক্ষার্থী পুরনো ঘরেই বসে রয়েছে। চলছে পড়াশোনা। অদূরে উনুন জ্বলছে। হাঁড়িতে খিচুড়ি রান্না হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এলাকায় পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে। আগে নলকূপ ছিল। এখন তা নেই। ভরসা বলতে সজলধারা প্রকল্পের জল। এলাকায় ট্যাপকল রয়েছে। সেখানেই জল আনতে যেতে হয়। সময় মতো জল না-আনলেই বিপত্তি। তখন হাঁড়িতে রান্নাও চড়বে না। পুরনো ঘরে পৃথক রান্নাঘর নেই। তাই যে ঘরে পড়াশোনা হয়, সেই ঘরেরই একদিকে চাল-ডাল মজুত রাখতে হয়। মাঝেমধ্যে ইঁদুর খেয়ে নেয়। ঝড়বৃষ্টির দিনে সমস্যা আরও বাড়ে। অনেক সময় পঠনপাঠনও ব্যাহত হয়। গত অগস্টে যেখানে নতুন ঘর তৈরির কাজ শেষ হয়েছে, সেখানে এখনও কেন তা চালু হল না? প্রশ্ন উঠছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilaphidated rooms Class school students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE