তৎপরতা: মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য তৈরি হওয়া হেলিপ্যাডে নিরাপত্তা-প্রস্তুতি। রবিবার জামবনির কাপগাড়িতে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
আজ, সোমবার ফের ঝাড়গ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও জঙ্গলমহলের এই জেলায় একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। শুরুতে প্রশাসনিক সভা করবেন। সেই সভা থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস হবে। পরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকে জেলার উন্নয়নমূলক কাজকর্মের পর্যালোচনা হবে। সভা হবে জামবনির কাপগাড়ি কলেজ মাঠে। আর বৈঠক হবে ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের দফতরের সভাঘরে।
গত অগস্টে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলকে খুব ভালবাসেন। তিনি বারবার জঙ্গলমহলে এসেছেন। আবার আসছেন।" এ বারও কি নতুন কোনও ঘোষণা থাকবে? সুকুমারের জবাব, ‘‘যা জানানোর মুখ্যমন্ত্রীই জানাবেন।’’ এই প্রথম কাপগাড়ির মতো এলাকায় সভা করতে চলেছেন মমতা। এক সময়ে এখানে মাওবাদীদের উপদ্রব ছিল। মুখ্যমন্ত্রী কি বার্তা দেন, তার অপেক্ষায় রয়েছে জঙ্গলমহল।
কয়েক সপ্তাহ আগে লালগড়ে শবর সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। তারপর শোরগোল পড়ে। রাজ্য সরকারের মতে, ওই মৃত্যু হয়েছে অসুখে। শবরপল্লির বাসিন্দাদের জীবন যাপনে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রশাসনিক তৎপরতাও নজরে পড়ছে। সরাসরি শবরদের নাম না করলেও দিন কয়েক আগেই নেতাজি ইন্ডোরের সভায় খোদ মমতা বলেছেন, ‘আমি গিয়ে ভাত খাইয়ে দিয়ে আসতে পারব না। কারও ঘরে ভাত না জুটলে দু’টাকা কেজি দরে চাল দিন। কার ঘরে ভাত নেই সে খবর কি আমাকে জেনে দিতে হবে?’ তার পরদিনই লালগড়ে ছুটেছিলেন সুকুমার হাঁসদা। শবর সম্প্রদায়ের সকলের জন্য রেশন কার্ড, শবর শিশুদের জন্য ক্রেশের ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধের একশো শতাংশ যাতে শবরদের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়েছে।
এই আবহে আজ, সোমবার জঙ্গলমহল সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কের কথায়, ‘‘লালগড়ের ঘটনার পরে সরকার নড়ে বসেছে। শবরপল্লিতে যে চাল দেওয়া হয় তার মান খুব খারাপ। মানুষ খেলে অসুস্থ হবেই। দেখা যাক এ বার ভাল চাল আসে কি না!’’ বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর আবার মন্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহল তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। পুলিশ- প্রশাসনকে দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। তাই হারানো এলাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার পাল্টা বলেন, ‘‘লালগড়ে মৃত্যু হয়েছে অসুখে। আর জঙ্গলমহলের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ, সোমবার হেলিকপ্টারে ঝাড়গ্রামে পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রীর। রাতে ঝাড়গ্রামেই থাকার কথা রয়েছে তাঁর। এখন মাওবাদীদের ‘শহিদ সপ্তাহ’ চলছে। প্রতি বছর ২৪-৩০ নভেম্বর ‘শহিদ সপ্তাহ’ পালন করে মাওবাদীরা। মুখ্যমন্ত্রীর সফর নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy