Advertisement
E-Paper

চতুর্মুখী লড়াইয়েই রেলশহর ত্রিশঙ্কু

কংগ্রেস ২৭, তৃণমূল ২৯, বিজেপি ২১ এবং বামেরা ১৯। রেলশহরে পুরভোটে চার দলের প্রাপ্ত ভোটের হার এমনই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পুরভোটে খড়্গপুরে ভোটের হারে কোনও দলেরই ৩০ শতাংশের উপরে উঠতে না পারা পুরসভা ত্রিশঙ্কু হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই ‘ম্যাজিক ফিগার’- এর অনেক আগেই থেমে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির বিজয়রথ।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৮

কংগ্রেস ২৭, তৃণমূল ২৯, বিজেপি ২১ এবং বামেরা ১৯। রেলশহরে পুরভোটে চার দলের প্রাপ্ত ভোটের হার এমনই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পুরভোটে খড়্গপুরে ভোটের হারে কোনও দলেরই ৩০ শতাংশের উপরে উঠতে না পারা পুরসভা ত্রিশঙ্কু হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই ‘ম্যাজিক ফিগার’- এর অনেক আগেই থেমে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির বিজয়রথ। রেলশহরের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “এটা ঠিক অন্তত ৩০ শতাংশ ভোট না- পেলে একক ভাবে ক্ষমতা দখল করা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। খড়্গপুরেও তাই হয়েছে। ভোট চার ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। ফলে, কেউই ‘ম্যাজিক ফিগার’- এ পৌঁছতে পারেনি।”

রেলশহরের ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন ১৬৬ জন। ভোটের আগে গোঁজ প্রার্থীদের নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব। কিন্তু ভোটের ফল বলছে, নির্দল- শিবির সাকুল্যে ২ শতাংশের কিছু বেশি ভোট কেটেছে। খড়্গপুরে এ বার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের হার ঠিক কী রকম? গতবার তৃণমূলের থেকে কম আসন পেয়েও প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। এ বার এগিয়ে তৃণমূল। যদিও তাদের আসন সংখ্যা গতবারের থেকে কমেছে। তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছে ২৯.২৪ শতাংশ ভোট (৪৪,৯৭৬), কংগ্রেসের ২৭.৪৭ শতাংশ ভোট (৪২,২৫৫), বিজেপির ২১.২৮ শতাংশ ভোট (৩২,৭৩৯) এবং বামেরা পেয়েছে ১৯.১৮ শতাংশ ভোট (২৯,৫০৪)। অন্য দিকে, নির্দল- শিবির ভোট পেয়েছে ২.৮১ শতাংশ (৪,৩২৩)।

অবশ্য এই প্রথম নয়, গতবারও রেলশহরে পুরভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হয়েছিল। ২০১০ সালের পুরভোটে কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছিল ৩১.১০ শতাংশ ভোট, তৃণমূলের ২৮.৯৪ শতাংশ ভোট, বামেদের ৩০.৬২ শতাংশ ভোট এবং বিজেপির ৫.৫৫ শতাংশ ভোট। রেলশহর কংগ্রেসের ‘গড়’ বলেই পরিচিত। পরে এখানে তৃণমূলের প্রভাব বাড়তে শুরু করে। শহর কংগ্রেসের এক নেতা মানছেন, “চতুর্মুখী লড়াইয়ে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, এটা আমরা জানতাম। কিন্তু, প্রাপ্ত ভোট ৩০ শতাংশও হবে না, এটা বুঝতে পারিনি!” শহর তৃণমূলের এক নেতারও অকপট স্বীকারোক্তি, “চতুর্মুখী লড়াইয়ে ভোটের মীমাংসা হয়তো অল্প ব্যবধানেই হবে, এটা জানা ছিল। কিন্তু, প্রাপ্ত ভোট ৩০ শতাংশের নীচে থাকবে, এটা আন্দাজ করতে পারিনি!”

এ বার পুরভোটে বেশ কয়েকটি আসনে মীমাংসা হয়েছে অল্প ব্যবধানেই। কেমন? ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের রিতা সেনগুপ্ত জিতেছেন মাত্র ২২ ভোটে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির অনুশ্রী বেহেরা জিতেছেন ৬৫ ভোটে। অন্য দিকে, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের জয়শ্রী পাল জিতেছেন ১৫১ ভোটে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির সুনীতা গুপ্ত জিতেছেন ১৪৩ ভোটে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের চন্দন সিংহ জিতেছেন ১০৯ ভোটে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের সুরেশ যাদব জিতেছেন ১৯২ ভোটে।

গত লোকসভার ফলের নিরিখে রেলশহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টিতেই এগিয়ে ছিল পদ্ম- শিবির। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের নিরিখে খড়্গপুরে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫১ হাজার (২৭.৫২ শতাংশ)। যেখানে তৃণমূল পেয়েছিল ৪০ হাজার ভোট এবং কংগ্রেস ২১ হাজার। ২০১১ সালে গত বিধানসভার নিরিখে অবশ্য রেলশহরে গেরুয়া- শিবিরের প্রাপ্ত ভোট ৬.৭৯ শতাংশ (৯,৩০৩)। ওই ভোটে কংগ্রেস পায় ৭৫,৪২৫ ভোট, বামেরা পায় ৪৩,০৫৬ ভোট। গত বিধানসভা ভোটে অবশ্য কংগ্রেস- তৃণমূলের জোট হয়েছিল। যদিও এ বার পুরভোটে ৭টি আসন পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপিকে। ফলে রেল শহরে পুরবোর্ড গঠন করতে না পেরে ভোট কাটাকাটিকেই কম-বেশি দায়ী করছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

Barun Dey Kharagpur Kharagpur municipality municipal election BJP Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy