বৈধ অনুমতিপত্র ছাড়া বেআইনি ভাবে হোটেল এবং লজ নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল আগেই। এ বার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণিতে বহু হোটেলে নিয়মবিধি ভেঙে সুইমিং পুল নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই সব পুলে নিরাপত্তাবিধি এবং স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
কাঁথি র মহকুমা শাসক প্রতিক অশোক ধূমাল বলেন,"সুইমিং পুল তৈরি এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে কী নিয়ম রয়েছে এবং তা ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা, খতিয়ে দেখা হবে।"
দিঘার অদূরে নিরিবিলি, শান্ত পরিবেশের মন্দারমণি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনিতে সপ্তাহান্তের ছুটিতে ভিড় থাকে মন্দারমণিতে। গ্রীষ্মের ছুটিতে সেই ভিড় কিছুটা হলেও বেড়েছে বলে দাবি হোটেল মালিকদের। কারণ, এখানকার বহু হোটেল এবং লজে সুইমিং পুল রয়েছে। এবং তার চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট।
পর্যটক টানতে এখানকার মাঝারি এবং ছোট হোটেলগুলিও নতুন সুইমিং পুল তৈরি করছে। কারণ, গরমের ছুটিতে বেড়াতে আসার আগে রুম বুকিংয়ের সময় পর্যটকেরা জানতে চাইছেন সুইমিং পুল আছে কিনা। না থাকলে তাঁরা অন্য হোটেলে চলে যাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেক হোটেল ও লজ স্বল্প পরিসর জায়গায় গর্ত করে, কংক্রিট দিয়ে সুইমিং পুল তৈরি করছে। সে ক্ষেত্রে নির্মাণবিধি, নিরাপত্তাবিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।
মন্দারমণি, দাদন পাত্র বাড়, পুরুষোত্তমপুর, সিলামপুর, দহসোনামুই মৌজায় নতুন করে বেশ কয়েকটি হোটেল এবং লজে সুইমিংপুল তৈরির খবর মিলেছে। এই সব পুলের জন্য স্থানীয় প্রশাসন বা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সুইমিং পুল আদৌ কতটা সুরক্ষিত এবং তার জল ঠিক মতো পাল্টানো হয় কিনা, সে সম্পর্কে নজরদারিরও বালাই নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, সুইমিং পুল যথাযথ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স নিতে হয়। সুইমিংপুলের জল সবসময় পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হয়, পরিমাণ মতো ক্লোরিন বা জীবানু নাশক ব্যবহার করতে হয়। তার নির্দিষ্ট গভীরতা, আকার হতে হয়। মন্দারমণির হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি মমরেজ আলি বলেন,"গরমে সুইমিং পুল-যুক্ত হোটেলের চাহিদা মন্দারমণিতে বেশি। বহু হোটেলে সুইমিং পুল তৈরি হলেও এর জন্য আলাদা করে কোনও অনুমতি নেওয়া হয় না। তবে সমস্ত হোটেলেই এখন মেশিনের মাধ্যমে পুলে জল ঢোকানো এবং বের করা হয়।"
হোটেলে সুইমিং পুল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানাচ্ছেন, পুলের জল ঘোলাটে হলে ক্লোরিন অথবা ফিটকিরি দেওয়া হয়। বছরে অন্তত দু’থেকে তিন বার জল পাল্টানো হয়। একাধিক হোটেল মালিক বলেন, ‘‘পুলের জল বারবার বদল করাতে সমস্যা রয়েছে। কারণ, এখানে সব হোটেলই গায়ে গায়ে তৈরি হয়েছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)