Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

হাতের কাছে অ্যাসিডেই বাড়ছে বিপদ

অ্যাসিড বিক্রিতে সরকারের তরফে নানা বিধি নিষেধ আছে। অ্যাসিড ব্যবসা রুখতে নিত্যনতুন আইনও চালু হচ্ছে। তবু থামছে না বেআইনি অ্যাসিড বিক্রি। থামছে না অ্যাসিড হামলাও।

সোনা দোকানে এভাবেই (চিহ্নিত) রাখা থাকে অ্যাসিড। নিজস্ব চিত্র

সোনা দোকানে এভাবেই (চিহ্নিত) রাখা থাকে অ্যাসিড। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

বেআইনি অ্যাসিড কারবারে কি আদৌ দাঁড়ি পড়বে! দাসপুরের ঘটনার পর ফের উঠছে প্রশ্ন।

অ্যাসিড বিক্রিতে সরকারের তরফে নানা বিধি নিষেধ আছে। অ্যাসিড ব্যবসা রুখতে নিত্যনতুন আইনও চালু হচ্ছে। তবু থামছে না বেআইনি অ্যাসিড বিক্রি। থামছে না অ্যাসিড হামলাও। গত শুক্রবার দাসপুর থানার জোতকানুরামগড়ে এক যুবক অ্যাসিড হানার শিকার হয়েছেন। কলকাতায় তাঁর চিকিৎসা চলছে। গত দু’বছরে ঘাটাল মহকুমায় পরপর ছ’টি বড় ধরনের অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। অ্যাসিড হানায় ঘাটালে এক মহিলার মৃত্যুও হয়েছে। আর ছোটখাটো ঘটনা তো আছেই।

নিয়ম হল লাইসেন্স ছাড়া অ্যাসিড বিক্রি ও ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। জেলাশাসকের দফতর থেকেই অনুমতি দেওয়া হয়। শুধু লাইসেন্স থাকলেই চলবে না। দোকানে স্টক রেজিস্টার থাকাও বাধ্যতামূলক। বিক্রির সময় ক্রেতার সচিত্র পরিচয়পত্র- সহ কেনার কারণও জানতে হবে। মাসে দু’বার দোকানে কত পরিমাণ অ্যাসিড মজুত আছে-তা লিখিতভাবে মহকুমা শাসককে জানাতেও হবে। নিয়ম না মেনে অ্যাসিড বিক্রি, হানা বেআইনি কারবার রুখতে এখন কড়া আইনও রয়েছে। নতুন আইনে অ্যাসিড দিয়ে কাউকে আক্রমণ করলে অভিযুক্তের দশ বছরের জেল ও জরিমানার নিদানও রয়েছে। ২০১৩ সালে ৩২৬ (এ) ৩২৬(বি) এই দু’টি ধারায় সংযোজনও হয়েছে। এখন তিন লক্ষ টাকা পযর্ন্ত ক্ষতিপূরণ
পাবেন আক্রান্তরা।

ঘাটালে বেআইনি অ্যাসিড বিক্রির বাড়বাড়ন্তের নেপথ্য অন্য কারণও রয়েছে। ঘাটাল শহর সহ দাসপুর, সাগরপুর, রাজনগর, চাঁইপাট-সহ বিভিন্ন এলাকায় সোনার কারবার বেশি হয়। অনেকে আবার বাড়িতেও অ্যাসিড ব্যবহার করে সোনার কাজকর্ম করেন। অভিযোগ, আইনের ফাঁক গলেই ঘাটালের ওই সব এলাকায় একাধিক দোকানে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে এই সব অ্যাসিড বেশিরভাগ দোকানিরা আনেন। ইদানীং আবার গাড়িতে করেই সরাসরি কলকাতা থেকে অ্যাসিড ঢুকছে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্থে। অভিযোগ, অধিকাংশ দোকানে লাইসেন্সও নেই। উল্টে ক্রমশ সহজলভ্য হয়ে উঠছে অ্যাসিড।

কী বলছে প্রশাসন? ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বললেন, “নিয়ম না মেনে অ্যাসিড বিক্রি হলে এবার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকারের কথায়, “দ্রুতই অভিযান করা হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযান হয় বটে। কিন্তু তার মেয়াদ খুবই ক্ষণস্থায়ী। কোনও ঘটনার পর পুলিশি তল্লাশি শুরু হলে সতর্ক হয়ে পড়েন অ্যাসিড বিক্রেতা। দোকান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় অ্যাসিড। ধরপাকড় চলাকালীন বন্ধ থাকে কারবার। তারপর পরিস্থিতি থিতিয়ে এলেই প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Acid Ghatal দাসপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE