Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Paddy

নির্দেশিকা ছাড়া কম ধান কেনার নালিশ

নভেম্বর থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে রাজ্য খাদ্য দফতর খারিফ মরসুমের ধান কেনা শুরু করেছে। ব্লকের কিসান মান্ডি ও অস্থায়ী শিবিরে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে।

সরকারি মান্ডিতে খারিফ মরসুমে ধান বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে কৃষকেরা।

সরকারি মান্ডিতে খারিফ মরসুমে ধান বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে কৃষকেরা। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে নির্ধারিত পরিমাণের তুলনায় কৃষকদের কাছ থেকে কম ধান কেনার অভিযোগ উঠলো। রসিদ থাকা সত্ত্বেও রাতারাতি ফোন করে কৃষকদের ধান কম নিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে বলে অভিযোগ চাষিদের। বাড়তি ধান নিয়ে গেলে তা ফেরত পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি মান্ডিতে খারিফ মরসুমে ধান বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে কৃষকেরা। যদিও এরকম কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

নভেম্বর থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে রাজ্য খাদ্য দফতর খারিফ মরসুমের ধান কেনা শুরু করেছে। ব্লকের কিসান মান্ডি ও অস্থায়ী শিবিরে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। ফড়েদের দৌরাত্ম্য বন্ধে অনলাইনে চাষিরা নাম নথিভুক্তের পরে সেই রসিদে ধান বিক্রির নির্দিষ্ট তারিখ ও ধানের পরিমাণ এবং কেন্দ্রের নাম জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলায় আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ২ লক্ষ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জেলা খাদ্য নিয়ামক সূত্রের খবর। প্রতিটি ব্লকে ধানের উৎপাদনের নিরিখে তাদের ধান ক্রয়ের নির্দিষ্ট সীমা ধার্য করেছে জেলা প্রশাসন।

কৃষকবন্ধু নথিভুক্ত চাষিরা এই সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি এবার ভাগচাষিরাও সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সুবিধা পাচ্ছেন। জেলার মধ্যে পটাশপুর ও এগরায় সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়। নিয়ম অনুযায়ী একজন নথিভুক্ত কৃষক মরসুমে সর্বোচ্চ ২৫ কুইন্টাল ধান সরকারি মান্ডিতে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে এগরা মহকুমায় সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে তার তুলনায় কম পরিমাণ ধান নেওয়া হচ্ছে। একজন কৃষকের রসিদে কুড়ি কুইন্টাল ধান দেওয়ার কথা। সেখানে রাতারাতি ওই কৃষককে ফোন করে সরকারি নতুন নির্দেশিকার অজুহাত দিয়ে ক্রয় কেন্দ্রে বারো কুইন্টাল ধান নিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে। নির্দেশ অমান্য করে বেশি ধান নিয়ে এলে তা ফেরত পাঠানোর হুঁশিয়ারিও দেওয়া হচ্ছে মান্ডি থেকে।

পটাশপুরের মতিরামপুরে কর্মতীর্থে শিবিরে পোস্টার লাগিয়ে ১৫ কুইন্টালের বেশি ধান নেওয়া হবে না বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। রসিদে দেওয়া নির্দিষ্ট পরিমাণের তুলনায় কম ধান নেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। বাড়তি ধান ফড়েদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। কেন কম ধান নেওয়া হচ্ছে চাষিরা প্রশ্ন করলেই শিবিরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, জেলা থেকে কম ধান নেওয়ার নির্দেশিকা রয়েছে। সুধীর পাত্র নামে এক কৃষক বলেন, ‘‘রসিদে আমার কাছ থেকে কুড়ি কুইন্টাল ধান ক্রয়ের কথা। শুক্রবার মান্ডি থেকে ফোন করে সরকারি নির্দেশের কথা জানিয়ে কম ধান নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। বেশি ধান নিয়ে এলে তা ফেরত পাঠানো হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। এখন বাড়তি ধান নিয়ে সমস্যায় পড়েছি।’’

যদিও জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতর থেকে এরকম কোনও নির্দেশিকা পাঠানো হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আধিকারিক দীপমালা পাল বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। কম ধান কেনার জন্য সরকারি কোনও নির্দেশিকা পাঠানো হয়নি। তবে কৃষকদের কাছ থেকে এই ধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Paddy Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE