আহত পার্থ। নিজস্ব চিত্র।
দিন দু’য়েক আগেই খেজুরিতে তৃণমূলের একাধিক কার্যালয় দখল এবং ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি’র বিরুদ্ধে। সেই খেজুরিতেই ফের শোরগোল মঙ্গলবার। ফের বিজেপি’র বিরুদ্ধে তৃণমূলের জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাসকে মারধর এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। যদিও স্থানীয় বিধায়ক তথা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা রণজিৎ মণ্ডলের দাবি, এলাকায় এ ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ খেজুরি-২ ব্লকের রসুলপুর থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এলাকায় দলীয় পতাকা বাঁধছিলেন বিজেপি কর্মীরা। সে সময় তাঁদের তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। খেজুরি-২ উত্তর মণ্ডলের সভাপতি নিখিল আড়ি বলেন, ‘‘সকালে দলের কর্মীরা কয়েকটি মোটর বাইকে চেপে বোগাতে দলীয় পতাকা বেঁধে রসুলপুরে গিয়েছিলেন। সেখানে পতাকা বেঁধে ফেরার পথে অতর্কিতে তৃণমূল দুষ্কৃতীরা আমাদের দলের কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়তে শুরু করে। আতঙ্কে তাঁরা মোটরবাইক ফেলে পালিয়ে যান।’’ নিখিলের অভিযোগ, তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ১০টি মোটরবাইক ভেঙেছে, ১৫টি মোটরবাইক এবং চারজন বিজেপি কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। যদিও স্থানীয় বিধায়ক রণজিতের দাবি, ‘‘এসব কিছুই হয়নি।’’
পুলিশকে জানানোর পরেও তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি— এর প্রতিবাদে করায় পরে খেজুরির বিদ্যাপীঠ মোড় এবং কুঞ্জপুরে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। সে সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়িতে যাচ্ছিলেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস। তাঁর গাড়ি লক্ষ করে বিজেপি কর্মীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বাঁশ দিয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের ভাগ্নে শুভদীপ মণ্ডল। পার্থপ্রতিমকে গুরুতর জখম অবস্থায় তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পার্থর কথায়, ‘‘গাড়ি থেকে নামিয়ে আমাকে মারাধর করা হয়েছে।’’
ওই ঘটনায় পাঁচজন বিজেপি কর্মীকে আটক ররা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এলাকায় রাজনৈতিক অশান্তি নিয়ন্ত্রণে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে। যদিও পার্থর উপরে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক তাপস দোলুই বলেন, ‘‘আমাদের দলের কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানানো হয়েছিল। তৃণমূল যখন রাজনৈতিকভাবে খেজুরিতে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ, সে সময় পুলিশ তাদেরকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছে। উল্টে মিথ্যা অভিযোগে আমাদের কর্মীকে আটক করছে।’’
উল্লেখ্য, গত শনিবার খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর অঞ্চলে শাসকদলের ছয়টি কার্যালয় দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও সে সময় তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ ছিল, এর পিছনে ‘দাদা’ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদেরও মদত থাকতে পারে। কারণ, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর দলবদলের জল্পনা জোরদার হয়েছে। ফলে তাঁর অনুগামীদেরও দলবদলের তত্ত্ব উঠে এসেছে। আর দলীয় নেতা আক্রান্ত হওয়া নিয়ে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতা তথা বিধায়ক রণজিতের এ দিনের মন্তব্যে ফের ধন্দে তৃণমূলেরই একাংশ। এ ব্যাপারে জানতে খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ দাসকে ফোন করা হয়। তবে তাঁর ফোনছিল বন্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy