Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
বিমার আওতায় সাড়ে ৬ লক্ষ চাষি
Bulbul

বুলবুলে ক্ষতি, সাড়ে ৮ লক্ষ আবেদনে ধন্দ

নভেম্বরের ৯ ও ১০ তারিখ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে জেলায় কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়। অধিকাংশ মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৫
Share: Save:

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদনের পরিসংখ্যান বলছে পূর্ব মেদিনীপুরে কৃষক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষতিপূর পেতে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ। জেলায় পর্চা তৈরিতে গতি আসার ফলেই এই সংখ্যাবৃদ্ধি বলে দাবি কৃষি আধিকারিকদের। যদিও কৃষকের সংখ্যা বাড়ার পিছনে জাল পরচা দিয়ে আবেদনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি কৃষিকর্তারা।

নভেম্বরের ৯ ও ১০ তারিখ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে জেলায় কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়। অধিকাংশ মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। সেই মতো কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হয়। বুধবার, ২২ জানুয়ারি বুলবুলে ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা শেষ হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, বুলবুলে আবেদনের সংখ্যা সাড়ে ৮ লক্ষের কাছাকাছি। অথচ কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদন পড়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ।

কৃষক সংখ্যায় ২ লক্ষের এই ব্যবধানই এখন মাথাব্যথা কৃষি দফতরের। বাড়তি এই ২ লক্ষ কৃষক এলেন কোথা থেকে?

জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের ধারণা, ‘‘জেলাশাসক পার্থ ঘোষের উদ্যোগে জেলায় জমে থাকা পরচা তৈরির কাজ গতি পেয়েছে। বিশেষ অভিযান চালিয়ে জমে থাকা কাজগুলি দ্রুত শেষ করা হয়েছে। তার ফলে যাঁরা এতদিন জমির নতুন রেকর্ডের জন্য আবেদন করেও পাননি, তাঁদের হাতে পৌঁছেছে পরচা। এর ফলে বেড়েছে কৃষকের সংখ্যা।’’ তিনি আরও জানান, পাশাপাশি এমনও অনুমান করা হচ্ছে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে নথিভুক্ত থাকা কৃষকের ন্যূনতম ২ ডেসিমাল জমি থাকলেই বছরে ১ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সরকারি অনুদান পাওয়া যায় এই প্রকল্পে। প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়তি টাকা পেতে কৃষকদের একাংশ তাঁদের জমি পরিবারের সদস্যদের নামে ভাগ বাঁটোয়ারা করে লিখে দিচ্ছেন। এর জেরেও কৃষকের সংখ্যা এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। সেই সঙ্গে ভুয়ো আবেদনের সম্ভাবনাও রয়েছে।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পটাশপুর-২ ব্লকে নকল পরচা তৈরি করে বেশ কিছু ভুয়ো আবেদন জমা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কৃষি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বুলবুলের ক্ষতিপূরণে অনেক ভুয়ো আবেদন পত্র জমা পড়েছে। এক ব্যক্তির নামে একাধিক আবেদন জমার নমুনাও রয়েছে। ভুয়ো আবেদন চিহ্নিত করতে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। কৃষকদের ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে দেরি হওয়ার এটাও কারণ।’’

তবে সরকারি সুবিধার জন্য জমির রেকর্ড তৈরিতে যে গতি এসেছে তা মানছেন সকলেই। পূর্ব মেদিনীপুরের কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর আশিস বেরা বলেন, ‘‘জেলাশাসকের উদ্যোগে জমির পরচা তৈরির কাজ গতি পেয়েছে। ফলে জেলায় নথিভুক্ত কৃষকের সংখ্যা বেড়েছে। তবে কৃষকদের একাংশ ‘কৃষক বন্ধু’র টাকার লোভে পরিবারের অন্য সদস্যের নামে জমি লিখে দিচ্ছেন। এটাও কৃষক সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সেইসঙ্গে ভুয়ো পরচা-সহ জমা পড়া আবেদন চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। তবে সমস্ত আবেদন খুঁটিয়ে দেখেই কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bulbul Compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE