জেলা কমিটি গঠন ঘিরে বিভ্রান্তি। প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য। আবার শাখা সংগঠনের জেলা কমিটির সম্পাদকও বটে। কেউ আবার দলের দুটি আলাদা শাখা সংগঠনের জেলা কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্বে। আবার কেউ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। সেই সঙ্গে শাখা সংগঠনের জেলা সভাপতিও। কোথাও পঞ্চায়েত প্রধানের পদ সামলানোর পাশাপাশি দলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি এবং শাখা সংগঠনের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষত কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় শাসক দলের এমন নমুনা আকছার। আর তাই জেলা ও ব্লক স্তরে নতুন কমিটি ঘোষণার পরে দলের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই।
২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তৃনমূলের কর্ম সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়, ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি বাস্তবায়িত করা হবে। গোড়ায় সুব্রত বক্সীকে সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে শুধু রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল। পরিবর্তে সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিযুক্ত হন। রাজ্যের একাধিক দফতরের প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরানো হয় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে।
যদিও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় এক ব্যক্তির একাধিক পদে থাকার উদাহরণ প্রচুর রয়েছে। জেলা কমিটির সদস্য হয়েছেন কাজল রানি বর্মন, আমিন সোহেল। এঁদের মধ্যে কাজল ভগবানপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং মহিলা তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি। আমিন আইএনটিটিইউসি’র জেলা সম্পাদক। আবার দলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি বিকাশ বেজ কাঁথি- ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। একই ভাবে রামনগর -১ ব্লকের তালগাছাড়ি -২ পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানা ওই ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি দলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক হন। রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের পাশাপাশি যুব তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতিও বটে।
২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পর দলের কর্ম সমিতির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘এক ব্যক্তির কাছে দুটো পদ থাকলে যে কোনও একটি দায়িত্ব অবহেলিত হয়। কোনওটাই ভাল করে করতে পারেন না।’’ সে সময় দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘ এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি ১০০ শতাংশ বাস্তবায়িত করব।’’ কিন্তু তারপরেও কী ভাবে একসঙ্গে এতজন একাধিক পদে রয়েছেন? প্রশ্ন উঠেছে দলের নিচু তলার কর্মীদের মধ্যে থেকেই।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেন,, ‘‘নতুন কমিটিতে এরকম কিছু ঘটেছে। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দেখছেন।’’ যদিও এই ঘটনায় শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘কোনওভাবেই তৃণমূল রাজনৈতিক দল নয়। লুটেরাদের যখন যেখানে যাকে দরকার তাকে নেতা বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর মুখে শুধু নীতি কথা আওড়াচ্ছেন শীর্ষ নেতারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy