Advertisement
E-Paper

কলেজের কাছেই গেরুয়া ক্যাম্প, আড়ালে টিএমসিপি

নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তার তোয়াক্কা না করেই কলেজ গেটের উল্টো দিকের রাস্তায় চলছে ছাত্র সংগঠনের ‘হেল্প ডেস্ক’। ল্যাপটপেই চলছে অনলাইনে ফর্মপূরণ।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০০:০১
দুই ছাত্র সংগঠনের ক্যাম্প।  টিএমসিপি, এবিভিপি ( ডান দিকের ছবি) । নিজস্ব চিত্র

দুই ছাত্র সংগঠনের ক্যাম্প। টিএমসিপি, এবিভিপি ( ডান দিকের ছবি) । নিজস্ব চিত্র

নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তার তোয়াক্কা না করেই কলেজ গেটের উল্টো দিকের রাস্তায় চলছে ছাত্র সংগঠনের ‘হেল্প ডেস্ক’। ল্যাপটপেই চলছে অনলাইনে ফর্মপূরণ।

এই দৃশ্য ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের সুবর্ণরেখা মহাবিদ্যালয়ের। ‘সহায়তা’য় রেষারেষিও রয়েছে ষোলোআনা। কয়েক হাতের মধ্যেই রয়েছে এবিভিপি এবং টিএমসিপি-র ‘হেল্প ডেস্ক’। গোলমাল এড়াতে বসেছে সশস্ত্র পুলিশি-পাহারা। তবে এখনও পর্যন্ত বেআইনি ভাবে টাকা চাওয়ার বা নেওয়ার কোনও অভিযোগ ওঠেনি। বরং দু’টি ছাত্র সংগঠনই নিখরচায় ফর্ম পূরণ করিয়ে দিচ্ছে।

লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রামে জিতেছে বিজেপি। আর তারপরই জেলার একের পর এক কলেজে ইউনিট খুলেছে এবিভিপি। গোপীবল্লভপুরের বর্গিডাঙায় সুবর্ণরেখা কলেজেও সম্প্রতি ইউনিট তৈরি করেছে গেরুয়া ছাত্র সংগঠন। গত ৩১ মে থেকে এই কলেজে অনলাইনে অনার্স ও পাস কোর্সের ভর্তির আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। চলবে ১১ জুন পর্যন্ত।

গত শনিবার থেকেই কলেজের বাইরে হেল্প ডেস্ক চালু করেছে এবিভিপি। সোমবার কলেজ গেটে পতাকা টাঙানো নিয়ে টিএমসিপি-এবিভিপি-র গোলমালও হয়। পুলিশ ডাকেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তারপর থেকে কলেজ চলাকালীন সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন থাকছে। কলেজে কারা ঢুকছে-বেরোচ্ছে দেখতে সিসিটিভিতে নজরদারির পাশাপাশি ভিডিয়োগ্রাফিও করা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নোটিস দিয়েও জানিয়েছেন, অফিস সংক্রান্ত কাজ ছাড়া বহিরাগত কেউ যেন কলেজে প্রবেশ না করেন। কলেজ চত্বরে ছাত্র সংগঠনের ব্যানার-ফেস্টুন না লাগানোর নোটিসও দেওয়া হয়েছে। এ সবেরই মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে টিএমসিপি-ও কলেজ গেটের উল্টো চালু করেছে হেল্প ডেস্ক।

তবে সে কথা জানা নেই বলে দাবি করলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রতনকুমার সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘কলেজের বাইরে কী হচ্ছে বলতে পারব না। অনলাইনে ভর্তি নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তবে দিন কয়েক আগে কলেজের গেটে গোলমাল হওয়ায় নোটিস দিয়েছি।’’

শুক্রবার কলেজে গিয়ে দেখা গেল বাইরে পুলিশ রয়েছে। ভিতরে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। এবিভিপি-র হেল্প ডেস্কে ল্যাপটপ, প্রিন্টার নিয়ে বসেছিলেন কৃষ্ণগোপাল জানা, চন্দন মহান্তি, শুভশ্রী পট্টনায়েকরা। কলেজেরই ছাত্রী শুভশ্রী জানালেন, এই ক’দিনে দেড়শোরও বেশি আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করেছেন তাঁরা। টিএমসিপি-র সহায়তা শিবির অবশ্য একটু ভিতরে। চট করে চোখে পড়ছে না। তবে সেখানেও দলীয় সংগঠনের পতাকা টাঙিয়ে ল্যাপটপ, প্রিন্টার নিয়ে বসে রয়েছেন টিএমসিপি কর্মীরা। হেল্প ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিএমসিপি নেতা সদ্য তৃতীয় বর্ষ উত্তীর্ণ সৌভিক বারিক বললেন, ‘‘ একেবারেই সেবামূলক এই উদ্যোগ। কাউকে জোর করা হচ্ছে না।’’ তবে এবিভিপি বাড়ি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের নিয়ে এসে আবেদন জমা দেওয়াচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন সৌভিক।

নিয়ম ভেঙে যে ‘হেল্প ডেস্ক’ চলা নিয়ে অবশ্য হেলদোল নেই কারও। বরং বিনা পয়সায় ফর্মপূরণ হয়ে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা খুশি। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ধানশোল গ্রামের দয়াবতী সরেন, ফানিয়ামারা উত্তম মহারানারা সমস্বরে বলছেন, ‘‘সাইবার কাফেতে ফর্মপূরণ করতে টাকা লাগে। এখানে দাদা-দিদিরা নিখরচায় ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছেন। সুবিধাই হচ্ছে।’’

গরিব ছাত্রছাত্রীদের জন্যই এই শিবির বলছেন ছাত্রনেতারা। টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সত্যরঞ্জন বারিকের কথায়, ‘‘এলাকার দরিদ্র পরিবারের পড়ুয়াদের অনেকেরই টাকা দিয়ে সাইবার ক্যাফে থেকে অনলাইনে ফর্ম পূরণের ক্ষমতা নেই। তাই এই আয়োজন।’’ এবিভিপি-র কলেজ ইউনিটের সভাপতি মানস দণ্ডপাটেরও বক্তব্য, ‘‘গবির ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করার জন্য সহায়তা শিবির করেছি।’’

TMCP ABVP Admission Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy