E-Paper

পুরসভার পানীয় জলে ছাদ ঢালাই, বিতর্ক

পাঁশকুড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি আমেনা খাতুন। তাঁর স্বামী নজরে রসুল খান তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের শহর সভাপতি ছিলেন। পাঁশকুড়া-ঘাটাল রাজ্য সড়কের ধারে সম্প্রতি নতুন বাড়ি তৈরি করছেন রসুল।

সৌম্য প্রামানিক

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৯:০০
পুরসভার পানীয় জল দিয়ে চলছে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ।

পুরসভার পানীয় জল দিয়ে চলছে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া পুরসভার বাসিন্দাদের কাছে তীব্র গরমে পানীয় জলের সঙ্কট অচেনা নয়। জল সঙ্কটের কারণে ‘লাল’ তালিকাভুক্ত হয়েছে এই এলাকা। আর সেখানেই পুরসভার পানীয় জলের গাড়ি আনিয়ে তৃণমূলের মহিলা পুরপ্রতিনিধির নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদ ঢালাই হচ্ছে! ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই কাজের বন্দোবস্ত করা পুরপ্রতিনিধির স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা।

পাঁশকুড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি আমেনা খাতুন। তাঁর স্বামী নজরে রসুল খান তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের শহর সভাপতি ছিলেন। পাঁশকুড়া-ঘাটাল রাজ্য সড়কের ধারে সম্প্রতি নতুন বাড়ি তৈরি করছেন রসুল। সে বাড়ির ছাদ ঢালাইয়ের জন্যই শনিবার দু’হাজার লিটার করে মোট চার হাজার লিটারের ট্যাঙ্ক ভর্তি পুরসভার জলের গাড়ি নিয়ে আসেন তিনি। সকাল থেকে সেই পানীয় জলেই ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। বিষয়টি জানাজানি হতে বাধে বিতর্ক।

তীব্র গরমে পাঁশকুড়ার একাধিক ওয়ার্ডে সাব-মার্সিবল পাম্প অকেজো হয়ে যায়। তখন বাসিন্দাদের পানীয় জলের জোগান দেয় পুরসভার এই জলের ট্যাঙ্কারগুলি। এ বার চৈত্রেই তীব্র গরম। শুরু হয়েছে জলকষ্টও। তারই মধ্যে এ ভাবে পানীয় জলের অপচয় নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। পাশে নয়ানজুলি থাকা সত্ত্বেও কেন সেই জল কেন ঢালাইয়ে ব্যবহার করা হল না, প্রশ্ন তুলেছেন পুরবাসী। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমেনা বিবি বলেন, ‘‘জলের সমস্যায় রমজান মাসেও দূর থেকে পানীয় জল আনতে হচ্ছে। অথচ, ওই পুরসভার পানীয় জলে বাড়ি ঢালাই চলছে। যদি দুটো জলের ট্যাঙ্কার আমাদের এলাকায় পুরসভা দিয়ে যেত, উপকার হত।’’

পুরসভা সূত্রে খবর, কোনও অনুষ্ঠানের জন্য পুরসভায় ৫০০ টাকা জমা দিলে পানীয় জল সরবরাহ করা হয় এই ধরনের ট্যাঙ্কারে। তবে সেই জলও কেবলমাত্র পানীয় হিসেবে ব্যবহার করাই নিয়ম, জানিয়েছেন পুর আধিকারিকেরা। তার পরেও শাসক দলের পুরপ্রতিনিধি ও তাঁর স্বামীর এই আচরণে অনেকেই হতবাক।

পুরপ্রতিনিধি আমেনা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর স্বামী ফোন ধরে বলেছেন, “যা বলার, আমিই বলব।” তবে দিনের শেষে রসুলের বক্তব্য, “সরকারি নিয়ম মেনে টাকা দিয়েই জল এনেছিলাম। বুঝেছি, ওই জলে ছাদ ঢালাই করা ঠিক হয়নি। উদ্বৃত্ত জল পুরসভায় ফেরত পাঠাচ্ছি।”

কিন্তু ছাদ ঢালাইয়ের কাজে পুরসভার পানীয় জল ব্যবহারের অনুমতি পুরসভা দিল কী করে? তার সদুত্তর মেলেনি। পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore Panskura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy