অঙ্গনওয়াড়ির চেনা ছবি। নারায়ণগড়ের বাখরাবাদে। ছবি: বিশ্বসিন্ধু দে
নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত শনিবারই রাজ্য সরকার স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ির ক্ষেত্রে কী হবে সেই প্রশ্নের জবাব ছিল না। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধও ছিলেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভিড়ের মধ্যে কাজ করতে তাঁদের সমস্যা হলে তখন কী হবে!
সোমবার বিকেলে নবান্নে বৈঠকের পরে অবশ্য সেই ক্ষোভে দাঁড়ি পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ছুটি থাকবে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে অঙ্গনওয়াড়ির উপর নির্ভরশীল প্রসূতি ও শিশুরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য বাড়ি বাড়ি মাথা পিছু ২ কেজি করে চাল ও আলু পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে জেলায় জেলায় এখনও সেই নির্দেশিকা পৌঁছয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরে অঙ্গনওয়াড়ি আছে ৬৩১৬টি। ফলে, এত গুলি কেন্দ্রের উপভোক্তাদের কী পদ্ধতিতে এই বিলি-বণ্টন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রকল্প আধিকারিক জগবন্ধু পাল জানান, ‘‘নির্দেশিকা পাইনি। আগে নির্দেশিকা দেখি। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।’’
তবে ছুটির ঘোষণায় খুশি বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী এবং সহায়িকারা। কেশিয়াড়ির খাজরা পঞ্চায়েতের সগেড়িয়া অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী সুপ্রিয়া চন্দ দুয়া, বেলদার বিনোদপুর অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী রত্না দাশগুপ্তেরা বলছেন, ‘‘অবশ্যই আমরা খুশি। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির ক্ষেত্রেও তো ছুটি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে।’’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আগে অঙ্গনওয়াড়ি থেকেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের পরিচর্যা চলে। শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতিদের পরিচর্যা, স্বাস্থ্যবিধি, ওষুধ প্রদানের পাশাপাশি পরিপূরক পুষ্টি প্রদান করা হয় অঙ্গনওয়াড়ি থেকে। ফলে, শুধু চাল ও আলু বাড়ি পৌঁছে দিলেও পরিপূর্ণ পুষ্টির জোগান কী ভাবে হবে সেই প্রশ্ন থাকছে। এক অন্তঃসত্ত্বা পায়েল দে বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি থেকে রান্না করা খাবার, ডিম এবং ফলিক অ্যাসিড পেতাম। স্বাস্থ্যবিধি জানানোর পাশাপাশি পরিচর্যাও করতেন কর্মী, সহায়িকারা। এই কদিন কী হবে জানি না।’’ কেশিয়াড়ির শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক বিকাশ রায়ের বক্তব্য, ‘‘পরিপূরক পুষ্টি ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে খামতি হবে ঠিকই। তবে সতর্কতাটাও প্রয়োজন। বিজ্ঞপ্তি হাতে পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy