মেদিনীপুর মেডিক্যালে চলছে করোনা পরীক্ষা। মঙ্গলবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
অনেকেই ভেবেছিলেন করোনা সঙ্কটের মেঘ বোধহয় কেটে গিয়েছে। কিন্তু ফের নতুন করে সংক্রমণের হার বাড়ছে। এখন রোজই বেশ কয়েকজন করে সংক্রমিতের খোঁজ মিলছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফের করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে জেলায়।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।’’ জেলার এক অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, সংক্রমণ কমে যাওয়ায় করোনা পরীক্ষাও কমে গিয়েছিল। এখন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবার পরীক্ষার উপরে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। ফের আগের মতো বিভিন্ন এলাকায় শিবির করেই নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সেই পরিকল্পনা চলছে।
সোমবারও পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন করে ৩৫ জন করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে। এঁদের মধ্যে আরটিপিসিআরে পরীক্ষা হয়েছে ১৮ জনের, অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছে ৩ জনের, ট্রুন্যাটে পরীক্ষা হয়েছে ১৪ জনের। সংক্রমিতদের কয়েকজন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এইচডিইউ-তে চিকিৎসাধীন। বাকিরা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ওই ৩৫ জনের মধ্যে মেদিনীপুরের ১১ জন, খড়্গপুরের ১৬ জন রয়েছেন। জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘কোনও উপসর্গ থাকলেই মানুষ যাতে করোনা পরীক্ষা করান, নতুন করে সেই প্রচারও শুরু হয়েছে। জনস্বার্থে প্রচারে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’
যথাযথ সুরক্ষাবিধি না মানলে প্রথম দফার মতো করোনার দ্বিতীয় দফার সংক্রমণও ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে বলে বারবার সাবধান করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’-এর ধাক্কায় ধরাশায়ী বেশ কিছু রাজ্য। জানা যাচ্ছে, আগের মতোই প্রত্যেক দিন জেলা জুড়ে ১,২০০ জনের করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হচ্ছে। এরমধ্যে ৮০০ জনের আরটিপিসিআরে পরীক্ষা হবে। বাকি ৪০০ জনের অ্যান্টিজেন টেস্ট হবে। নতুন একাধিক নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র শুরু হবে। পিংলা, কেওয়াকোল, বাগদায় নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র চালু হওয়ার কথা।
আরটিপিসিআর পরীক্ষা যাতে আরও বেশি করা হয়, রাজ্যগুলিকে সেই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সেই নির্দেশ জেলায়ও এসেছে। কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি, নতুন স্ট্রেইনের প্রভাব কেমন, সেদিকেও নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভিন্ রাজ্যে নতুন স্ট্রেইনের উপস্থিতি মিলেছে। এই নতুন স্ট্রেইন না কি আরও বেশি ভয়ঙ্কর, আরও বেশি সংক্রামক। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা স্বাস্থ্যবিধি শিথিল হওয়ায় মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার, দূরত্ববিধি মেনে চলার প্রবণতা কমে যাওয়ায় এক ধাক্কায় ফের বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ ঠেকাতে করোনা পরীক্ষার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি আরও কড়া করতে হবে।
শহর, শহরতলির ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষার শিবির করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচিতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। মানুষকে সতর্ক করতে মাইকিং হবে। করোনাবিধি মেনে চলতে ও প্রতিষেধক নিতে আবেদন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy