Advertisement
E-Paper

বিধি মেনে ছাড়েও প্রশ্ন

গত সোমবার পঞ্চায়েতের তরফে মাইকে প্রচার করা হয়— এলাকায় সচেতনভাবে বেরিয়ে কেনাকাটা করা যাবে। তারপরেই বাজারে অনেক দোকান খুলতে শুরু করেছিল ও লোকজনের আনাগোনা বেড়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৩৫
নজরে: কেউ অকারণ বেরচ্ছেন কি না খেয়াল রাখছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নজরে: কেউ অকারণ বেরচ্ছেন কি না খেয়াল রাখছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

ওড়িশায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে দাঁতনের সাউরির এক বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে তাঁর এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছিল। ক’দিন হল সেই বিধি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। আর তাতেই উঠেছে প্রশ্ন।

অনেকের মতে, লকডাউন চলছে। ফলে, পুলিশ-প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকাই কাম্য। দাঁতনের এই এলাকার গা ঘেঁষেই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, যেখানে বিয়েবাড়ি থেকে ছড়িয়েছিল করোনা সংক্রমণ। অনেকের আবার যুক্তি, পুলিশ ছাড় দিলেও সতর্ক রয়েছে। নিত্য অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, ব্যাঙ্ক, রেশন ছাড়া আর কোনও কিছুতেই ছাড় দেয়নি। ‘হোম ডেলিভারি’ চালু থাকলেও আগের থেকে কমেছে। সাউরি বাজার এলাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। প্রতিদিন বিকেলে এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ।

গত সোমবার পঞ্চায়েতের তরফে মাইকে প্রচার করা হয়— এলাকায় সচেতনভাবে বেরিয়ে কেনাকাটা করা যাবে। তারপরেই বাজারে অনেক দোকান খুলতে শুরু করেছিল ও লোকজনের আনাগোনা বেড়েছিল। স্থানীয় দোকানি সমরেন্দু পণ্ডা বলেন, ‘‘খুব দরকারে মাস্ক পরে বেরনোর কথা বলেছে পুলিশ। বৃদ্ধের বিষয়টি সামনে আসার পরে তো কয়েকদিন আমরা ঘর থেকে বেরতেই পারিনি।’’ ওষুধ দোকানি কৌশিক চণ্ড জানান, এখন মানুষ দোকানে আসতে পারছেন। দু’দিন আগে যেটা সম্ভব হয়নি। এলাকার বাসিন্দা চন্দন দাসও বলেন, ‘‘এখন তবু রাস্তায় বেরনো যাচ্ছে। দু’-তিন দিন তা-ও করা যায়নি।’’ সাউরি বাজার কমিটির সভাপতি স্বপন মাইতি জানালেন, পুলিশ-প্রশাসন নিয়ম মেনেই কাজ করছে। অনিয়ন্ত্রিত যাতায়াত, মাস্ক না পরে বেরনোর বিষয়টি দেখছে। হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও রেখেছে।

কিন্তু মাইক প্রচার হল কেন? স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দিলীপ সামন্তের ব্যাখ্যা, ‘‘বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক অভিযোগ আসছিল। সে দিকটা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সিদ্ধান্ত মতোই সব কিছুই চলছে।’’

ওড়িশায় গিয়ে সাউরির বৃদ্ধ করোনা পজ়িটিভ হন গত ৮ মার্চ। তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। এলাকা জীবাণুমুক্ত করে সিল করে দেয় পুলিশ। কোয়রান্টিনে থাকা ১৭ জনকে পরীক্ষার পরে ইতিমধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরেই এলাকাকে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কারণ, বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের সমস্যার অভিযোগ আসছিল। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভের পরেও কেন এত কড়াকড়ি— প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। তবে নিয়ম শিথিল করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এ দিন সাউরি বাজারের কাছে ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে ভিড় দেখা যায়। এক মহিলা বলেন, ‘‘আপাতত কোনও বাধা পাইনি। টাকা তুলতে এসেছি।’’ এই পঞ্চায়েত এলাকার তিন দিকেই আছে পূর্ব মেদিনীপুর। জেলার সংযোগস্থলের রাস্তায় পুলিশের নাকা চলছে। ইতিমধ্যেই স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত এগরা। তার কাছেই এই ঢিলেঢালা মনোভাব অনেকেই মানছেন না। এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী অনিলকুমার চণ্ড রায় বলেন, ‘‘সবই তো পুলিশ বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছিল। আরও কয়েকদিন কড়াকড়ি থাকলেই ভাল হত। একেবারে তো নিরাপদ নই, আতঙ্কও কাটেনি।’’

পুলিশের বক্তব্য, সব দিক বিচার করে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে সর্বক্ষণ নজরদারি চলছেই।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy