Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Crackers

flood: প্লাবিত বাজি-গ্রাম, জলে কারবার

বাজির কারবারে অনেকটাই ভাটা পড়লেও কিছু উপার্জনের তাগিদে যে সব জায়গায় জল ওঠেনি সেখানে লুকিয়ে চুরিয়ে অল্প বিস্তর বাজি তৈরির কাজ চলছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৪৯
Share: Save:

দীপাবলির আগে বাড়ির ছোট থেকে বড় সকলেই বাজি তৈরিতে নেমে পড়ত। সারা বছরের আয়ের জন্য কালীপুজোর আগে কয়েকটা দিন দম ফেলার ফুরসত থাকত না। বেআইনি জেনেও লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে বাজি কারখানা চালাতেন ব্যবসায়ীরা। এ বার বন্যায় সেই বাজির কারবারে অনেকটাই ভাটা পড়লেও কিছু উপার্জনের তাগিদে যে সব জায়গায় জল ওঠেনি সেখানে লুকিয়ে চুরিয়ে অল্প বিস্তর বাজি তৈরির কাজ চলছে।

দুর্গাপুজো থেকেই রাজ্যে বাজির চাহিদা বাড়ে। দীপাবলিতে তা তুঙ্গে ওঠে। রাজ্যে সরকার অনুমোদিত যে কয়েকটি বাজি কারখানা রয়েছে তার থেকে বেআইনি বাজি কারখানায় বেশি পরিমাণে আতসবাজি তৈরি হয়। চোরাপথে সেই বাজি পৌঁছে যায় বাজারে। এগরা মহকুমায় একটিও অনুমোদিত বাজি কারখানা নেই। প্রতি বছর পুলিশি অভিযানে প্রচুর বেআইনি বাজি-সহ অসাধু ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হয়। পটাশপুর এলাকা বেআইনি বাজির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত। বন্যার আগে পর্যন্ত পটাশপুর-১‍ ‍‍ব্লকের গোকুলপুরে বেআইনি বাজি কারখানায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রচুর বাজির মশলা-সহ এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল। ভগবানপুরের গুড়গ্রামে ২০১৯ সালে বেআইনি বাজি তৈরি করার সময় বিস্ফোরণে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঘরের দেওয়াল ভাঙে, উড়েছিল ছাউনি। পটাশপুর ও ভগবানপুর এ বার বন্যা প্লাবিত। চিস্তিপুর ও বড়হাট, মথুরা, আড়গোয়াল এই অঞ্চলগুলিতে সবচেয়ে বেশি বেআইনি বাজির কারবার চলে। অধিকাংশ এলাকাতেই বন্যা হওয়ায় মানুষ বাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। উঠোন থেকে জল নামায় অনেকে বাড়ি ফিরলেও এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। বাড়িতে যেটুকু জিনিসপত্র ও বাজি তৈরির মশলা ছিল সবই জলে নষ্ট হয়েছে। জল পেরিয়ে নতুন করে কারবার শুরু করার যেমন সমস্যা রয়েছে। তেমনই আগ্রহও হারিয়েছেন অনেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকা মথুরা, আড়গোয়াল এবং সাউৎখন্ডে বেআইনি বাজি তৈরির কারবার চালাচ্ছেন অনেকে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে কৌশল বদলে বন্যা প্লাবিত এলাকায় কোনও উঁচু জায়গায় চলছে বাজি তৈরি। পটাশপুর-১ ব্লকের গোকুলপুর ও মহেশপুর এবং ভগবানপুরের মহম্মদপুর, গুড়গ্রাম, বিভীষণপুরে বন্যা হওয়ায় ইতিউতি বাজি তৈরি হলেও তা খুবই নগণ্য। তবে এগরার পানিপারুল, বাথুয়াড়ি, জুমকি এলাকায় আগের মতোই পুরোদমে বেআইনি বাজির কারবার চলছে। বাড়ির মহিলা, শিশু থেকে বয়স্করা সকলেই বাজি তৈরিতে হাত লাগিয়েছে। বন্যার কারণে শহর এলাকায় পবাজি পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হলেও সামনে কালীপুজোর চাহিদার কথা রেখে সক্রিয় হয়েছে বাজি কারবারিরা। এক বাজি ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ডুবে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই সময় বাজি বানিয়ে সারা বছরের আয় হত। জল থাকায় বেশিদিন কাজ শুরু করতে পারিনি। সংসার চালাতে অল্প পরিমাণে হলেও বাজি তৈরি করতে বাধ্য হচ্ছি।’’

এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘এলাকায় প্রতিনিয়ত বেআইনি বাজি কারবারের উপর নজরদারি চালানো হয়। বন্যায় ত্রাণের কাজে পুলিশ কর্মীরা ব্যস্ত থাকায় নজরদারির ক্ষেত্রে হয়তো কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে দ্রুত এলাকা চিহ্নিত করে পুলিশি অভিযান চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crackers flood Kali Puja 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE