Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

ক্ষতিপূরণ ফেরত নিলেন নেতা!

পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক চন্দনের বাড়ি মাটির। তাঁর দাবি, ঝড়ে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি আবেদন করেছিলেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব  সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৩৭
Share: Save:

আমপানে ভাঙা বাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা পেয়ে ফেরাতে চেয়েছিলেন এক প্রাথমিক শিক্ষক। অভিযোগ, নিয়মমাফিক টাকা ফেরতের বন্দোবস্ত করার বদলে তাঁর টাকা নিয়েছেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। সাদা কাগজে প্রাপ্তিস্বীকারের সই করে ‘রসিদ’ও দিয়েছেন ওই নেতা। নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের আমদাবাদ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই ঘটনা সামনে আসার পরেই শোরগোল পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা চন্দন দাস আমপানে বাড়ি ভাঙার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পয়েছিলেন। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক চন্দনের বাড়ি মাটির। তাঁর দাবি, ঝড়ে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পরে ক্ষতিপূরণ টাকা পাওয়ার পরে নিজে একজন সরকারি শিক্ষক হওয়ায় তিনি সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর। এ জন্য পঞ্চায়েত সদস্য হিমাংশু জানার সঙ্গে চন্দন যোগাযোগ করেন। চন্দনের অভিযোগ, হিমাংশু তাঁকে বিডিও-র কাছে যেতে বাধা দেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর হিমাংশু চন্দনের কাছ থেকে তাঁর ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাতে চন্দন ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে টাকা পাওয়ার ব্যাপারে লিখিতভাবে জানানোর প্রস্তাব দেন।

প্রাথমিক শিক্ষকের ওই প্রস্তাবে রাজি হন পঞ্চায়েত সদস্য। নিজের স্ট্যাম্প ব্যবহার করে তিনি লিখিতভাবে আমপানের ২০ হাজার টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করেন। চন্দন বলেন, ‘‘ওই টাকার প্রাপ্তি লিখিত ভাবে স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য। নিজের স্ট্যাম্প দিয়ে রসিদও দিয়েছেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে এখানেই। এক জন পঞ্চায়েত সদস্য কী করে এভাবে সরকারের ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত নিতে নিতে পারেন? নন্দীগ্রামে-২ এর বিডিও সুরজিৎ রায় বলছেন, ‘‘কেউ ক্ষতিপূরণ ফেরত দিতে চাইলে তিনি ব্লক অফিসে এসে তা জমা করে রসিদ নেবেন। কোনও ভাবেই ওই টাকা জনপ্রতিনিধিরা পেরত নিতে পারেন না।’’ তাহলে হিমাংশু টাকা নিলেন কেন? অভিযুক্ত হিমাংশুর জবাব, ‘‘বিষয়টা ঠিক বুঝতে পারিনি। আসলে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, অথচ টাকা পাননি, তাঁদের ওই ফেরতের টাকা বিলিয়ে দেব ভেবেছিলাম। বুথ থেকে দলগতভাবে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই টাকা নিয়েছি।’’ যদিও তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল বলছেন, ‘‘দল থেকে এরকম সিদ্ধান্ত হয়নি। ব্যক্তিগত স্বার্থে টাকা নেওয়া হয়েছে। এখন ধরা পড়ে দলের বদনাম করছে। এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে দল।’’

তবে বিতর্কের এখানেই শেষ হয়নি। চন্দনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে তিনি কী জানতে না, যে এভাবে টাকা ফেরত দেওয়া যায় না? এ ব্যাপারে চন্দনের জবাব, ‘‘আমি বিডিও অফিসে টাকা ফেরত দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু ওই পঞ্চায়েত সদস্য আমাকে বিডিও অফিসে টাকা ফেরত দিতে মানা করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone Fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE