Advertisement
E-Paper

ধন্যবাদ আধার! ছেলেকে ফিরে পেয়ে কেন আধারে আপ্লুত বাবা?

রমেশের বাড়ি বিহারে। তাঁর বড় ছেলে বিশাল কুমার জন্ম থেকেই মূক ও বধির। গত ২৬ অক্টোবর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে আর ফেরেনি।

সৌমেশ্বর মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০৪
পুনর্মিলন: পরিজনদের সঙ্গে বিশাল। —নিজস্ব চিত্র

পুনর্মিলন: পরিজনদের সঙ্গে বিশাল। —নিজস্ব চিত্র

দেড় মাসেরও বেশি নিখোঁজ ছিল এক মূক-বধির কিশোর। শেষমেশ ছেলেকে ফেরত পেয়ে আধার কার্ডকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন রমেশ মাহাতো।

রমেশের বাড়ি বিহারে। তাঁর বড় ছেলে বিশাল কুমার জন্ম থেকেই মূক ও বধির। গত ২৬ অক্টোবর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে আর ফেরেনি। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনদের কাছে খুঁজেও ছেলেকে পাননি রমেশ। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। গোড়ায় লাভ হয়নি তাতেও।

এ দিকে, নভেম্বরের গোড়ায় খড়্গপুর স্টেশন চত্বরে এক মূক-বধির কিশোরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে জিআরপি। তারপর তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় খড়গপুর রেলওয়ে চাইল্ড লাইনে। সেখান থেকে মেদিনীপুরে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লুসি)-র অফিস ঘুরে গত ১০ নভেম্বর ওই কিশোরের ঠাঁই হয় ডেবরায় মূক ও বধিরদের বিশেষ হোম ‘চককুমার অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল সার্ভিস’-এ। হোম কর্তৃপক্ষ প্রথমেই এক চিলতে কাগজ দিয়ে ওই কিশোরকে নিজের নাম-ঠিকানা লিখতে বলেন। হিন্দিতে সে শুধু নিজের নামটুকু লেখে— বিশাল। কিন্তু তা থেকে তো আর ছেলেটির বাড়ির হদিস পাওয়া সম্ভব নয়। তাই হোমের সদস্য হিসেবে তাকে রাখার প্রক্রিয়া শুরু করেন কর্কৃপক্ষ।

হোম সম্পাদক ত্রিদিব দাস বলেন, ‘‘নিয়মমতো হোমের সব আবাসিকের আধার কার্ড করাতে হয়। তাই বিশালকে ডেবরা ব্লক আধার কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে কার্ড করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। দিন সাতেক পরে মোবাইলে এসএমএস আসে, বিশালের আধার কার্ড রয়েছে।’’ এরপর বিশালের আঙুলের ছাপ দিয়ে আধার কার্ড বের করতেই দেখা যায়— তার বাড়িও বিহারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রমেশ মাহাতোর হারিয়ে যাওয়া ছেলেই হল এই বিশাল।

ত্রিদিববাবু বলছিলেন, ‘‘বাড়ির ঠিকানা জানতেই আমরা বিহারের থানার ফোন নম্বর জোগাড় করে পুলিশের সঙ্গে কথা বলি। ওখানকার পুলিশ বিশালের বাড়িতে খবর দেয়। তারপর হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল করে বিশালের ছবি দেখে শনাক্ত করেন রমেশ।’’

বৃহস্পতিবার হারানো ছেলেকে বাড়ি নিয়ে গেলেন রমেশ। এ দিন মেদিনীপুরে এসেছিলেন রমেশ-সহ বিশালের পরিজনেরা। যাবতীয় নথি যাচাই করে বিশালকে তাঁদের হাতে তুলে দেয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। কমিটির সভানেত্রী মৌ রায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন হোম কর্তৃপক্ষককে অনুরোধ করব, বাচ্চাদের সঙ্গে মিশে, কাউন্সেলিং করে নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা করুন।’’

রমেশ অবশ্য ছেলেকে পেয়ে আধার কার্ডেরই গুণগান করছেন। বিশালকে বুকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মূক-বধির ছেলেকে যে কোনও দিন ফেরত পাব ভাবিনি। ২০১৪ সালে ভাগ্যিস ওর আধার কার্ডটা করেছিলাম।’’

Aadhaar Card Teenager Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy