Advertisement
E-Paper

মশার কামড়ে পড়া শিকেয় উঠেছে স্কুলেও

তাঁর অভিযোগ, ‘‘ব্লিচিং পাউডার চেয়েও পাইনি। অবশেষে অন্য একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের থেকে ব্লিচিং চেয়ে এনে স্কুলে ছড়ানো হয়েছে। তবে মশার হাত থেকে নিস্তার মেলেনি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
খড়্গপুরের ইন্দা বয়েজ স্কুল চত্বর দিয়ে চলে গিয়েছে নিকাশি নালা। এই নালার জমা জল থেকেই মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে অভিযোগ। নজর নেই পুরসভার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

খড়্গপুরের ইন্দা বয়েজ স্কুল চত্বর দিয়ে চলে গিয়েছে নিকাশি নালা। এই নালার জমা জল থেকেই মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে অভিযোগ। নজর নেই পুরসভার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

মশা মারতে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার, তেল। সাফাই হচ্ছে আবর্জনাও। যদিও খড়্গপুর শহরের একাধিক স্কুল চত্বর যে মশাদের ‘নিরাপদ’ আশ্রয় হয়ে উঠছে, সে দিকে নজর নেই পুরসভার! ক্লাসে বসা পড়া শোনা দূর অস্ত, মশার কামড় খেতে খেতে নাজেহাল হচ্ছে পড়ুয়ারা।

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক, স্কুলগুলির অবস্থা প্রায় একই। স্কুল চত্বরে জমে থাকা জল-আবর্জনায় জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৮১-তে ঠেকেছে। জ্বরে আক্রান্তও অনেকে। পুজোর আগে অগস্ট মাস থেকেই রেলশহরে জ্বরের প্রকোপ বাড়তে থাকে। যদিও এখনও শহরের স্কুলগুলিতে মশা মারতে তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরকে বারবার অনুরোধ করলেও কোনও পদক্ষেপ না করার অভিযোগও উঠছে।

খড়্গপুরের সুভাষপল্লি জনকল্যাণ বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক মদন নাগ বলছিলেন, “স্কুলে মশার উপদ্রবে টেকা দায়। শীতেও অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় আমি স্থানীয় কাউন্সিলরকে স্কুলে মশা মরার তেল দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ব্লিচিং পাউডার চেয়েও পাইনি। অবশেষে অন্য একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের থেকে ব্লিচিং চেয়ে এনে স্কুলে ছড়ানো হয়েছে। তবে মশার হাত থেকে
নিস্তার মেলেনি।”

স্থানীয় কাউন্সিলর সুনীতা গুপ্ত দাবি করছেন, প্রধান শিক্ষক মিথ্যা কথা বলছেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওই স্কুলের সভাপতি হওয়ায় তিনি ব্লিচিং পাঠিয়েছেন বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছে প্রধান শিক্ষক ব্লিচিং চাননি। স্কুল চত্ত্বরের বাইরে তিনি ব্লিচিং দিয়েছেন।

ইন্দার কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনের অবস্থা আরও খারাপ। এই স্কুল চত্বর দিয়ে চলে গিয়েছে নিকাশি নালা। যদিও ওই নালা নিয়মিত সংস্কার হয় না। স্কুলের চারিদিকেও আবর্জনার স্তূপ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থ ঘোষের কথায়, “আমার স্কুলে অনেক পড়ুয়ার ডেঙ্গি হয়েছে। স্কুলের মধ্যে নিকাশি নালা তাকাই এর বড় কারণ। চারিদিকে আবর্জনা জমে রয়েছে। সঙ্গে মশার উপদ্রব।’’ তিনি বলছেন, ‘‘মশার উপদ্রবে পড়ুয়ারা ক্লাসে অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। মাস দু’য়েক আগে পুরসভার পক্ষ থেকে মশানাশক তেল স্প্রে করা হয়েছিল। তারপরেও অবস্থা একই থাকায় আমরা নিজেরাই স্কুলে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।”

শহরের অনেক প্রাথমিক স্কুলেও মশার উপদ্রবে পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে। ভগবানপুরের সেবাসঙ্ঘ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অনামিকা চক্রবর্তী বলেন, “মাস দু’য়েক আগে স্কুলের পাঁচিলের পাশে মশানাশক তেল স্প্রে করা হয়েছিল। তারপর থেকে তেল-ব্লিচিং কিছুই দেওয়া হয়নি। ছেলে-মেয়েদের মশা কামড়াচ্ছে।”

ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষানিকেতনের দশম শ্রেণির ছাত্র জিৎ চৌধুরী, দেবমাল্য বসুদের কথায়, “ক্লাসে বেঞ্চের নিচে সারাদিন মশার কামড় সহ্য করতে হচ্ছে। পুরস ভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। স্কুলের পক্ষ থেকেই শৌচাগার, নিকাশি নালায় ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে মশা মারার চেষ্টা চলছে। তারপরেও মশার উৎপাত কমেনি।”

স্কুলে মশা মারতে কেন তৎপরতা চোখে পড়ছে না? এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “মশা মারতে ব্লিচিং একেবারেই কার্যকর নয়। আমরা তাই মশা মোকাবিলায় লার্ভা মারার তেল ব্যবহারে জোর দিয়েছি।”

Dengue Mosquitoes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy