পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আগেই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। এ বার পূর্ব মেদিনীপুরেও তিন জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলল। খেজুরি, রামনগর, মুগবেড়িয়ার কয়েকটি জায়গায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সকলেরই চিকিৎসা চলছে। তাঁদের রক্তের নমুনাও পরীক্ষাও করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কাঁথির মুগবেড়িয়ার জুখিয়া গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব পোদ্দার নামে বছর বাইশের যুবক জ্বর নিয়ে রবিবার সকালে তমলুক জেলা হাসাপতালে ভর্তি হন। তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। খেজুরির কুঞ্জপুর ও পানখই গ্রামের আর দু’জনের রক্তেও ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।
কুঞ্জপুর গ্রামের যুবক লক্ষ্মীকান্ত সাঁতরা গত বুধবার কামারদা হাসপাতালে ভর্তি হন। কামারদা হাসপাতাল ও স্থানীয় একটি গবেষণাগারে লক্ষ্মীকান্তের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া যায়। যদিও লক্ষ্মীকান্তবাবু বর্তমানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এ ছাড়াও খেজুরির পানখাই গ্রামের বাসিন্দা শ্যামচরণ দাসের ডেঙ্গির ‘নন করফারমেটিভ টেস্ট’-এর ফল পজিটিভ। তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা কুঞ্জপুর ও পানখই গ্রামে যান। পরে শিলাবেড়িয়াতে খেজুরি-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক বৈঠকও হয়। উপস্থিত ছিলেন উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্ত, জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস, বিএমওএইচ মানস হালদার প্রমুখ।
খেজুরি -২ ব্লকের বিএমওএইচ মানস হালদার জানান, “লক্ষ্মীকান্তের রক্তের ‘নন কনফারমেটিভ’ পরীক্ষার ফল পজিটিভ হওয়া মানেই সে ডেঙ্গি আক্রান্ত এটা চূড়ান্ত ভাবে বলা যাবে না। এ জন্য আরও কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন, যেগুলি তমলুক জেলা হাসপাতালে করা হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত কুঞ্জপুরের যুবক লক্ষ্মীকান্ত সাঁতরা বতর্মানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ভয়ের কিছু নেই।”
গত শুক্রবার রাতে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে মৃত্যু হয় জ্বরে আক্রান্ত এক বালকের। তমলুকের কেলোমাল এলাকার মুরারীকালুয়া গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সংকেত সরকারকে প্রথমে তমলুকের এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে আরজিকরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা সংকেতের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ম্যালেরিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘জ্বরে ভুগে তমলুকের স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’
পশ্চিমে ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন ৬ জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা, দু’জন গড়বেতা- ৩ ব্লকের বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে একজন শালবনির ও একজন কেশপুরের বাসিন্দা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে দাবি, এই ছ’জনই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সকলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই ছ’জনই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy