Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Lalgarh Primary health Center

মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধনের পরেও তালা বন্ধ অন্তর্বিভাগ

এক সময় লালগড়কে কেন্দ্র করেই অশান্ত হয়ে উঠেছিল জঙ্গলমহল। রাজ্যে সরকার বদলের পরে সেখানে ঝাঁ-চকচকে বহুতল নার্সিং ট্রেনিং স্কুল হয়েছে।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তালা বন্ধ।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তালা বন্ধ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধন হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু লালগড়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনে অন্তর্বিভাগ (ইন্ডোর) এখনও চালু হয়নি। ১৪ কোটি ব্যয়ে তৈরি হওয়া এই ভবন নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। গত বছর ১৫ নভেম্বর বেলপাহাড়ির সাহাড়িতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে ৩০ শয্যার ওই নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনের কয়েক মাস বাদে সেখানে শুধুমাত্র বহির্বিভাগ (আউটডোর) চালু হয়। কিন্তু অন্তর্বিভাগ পরিষেবা এখনও চালু হয়নি।

এক সময় লালগড়কে কেন্দ্র করেই অশান্ত হয়ে উঠেছিল জঙ্গলমহল। রাজ্যে সরকার বদলের পরে সেখানে ঝাঁ-চকচকে বহুতল নার্সিং ট্রেনিং স্কুল হয়েছে। চওড়া পিচের রাস্তা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের জন্য কংসাবতীর উপর সেতু হয়েছে। জমজমাট দোকান-বাজার ও বসতি হয়েছে। বাম আমলে প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। তাতে ১০টি শয্যা ছিল। সেটিকেই নতুন করে ৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীত করা হয়েছে। খরচ হয়েছে ১৪ কোটি ১৪ লক্ষ। নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে (সোশ্যাল সেক্টর)। ২০১৯ সালের শেষ দিকে তার প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চত্বরে মোট ছ’টি ভবন হয়েছে। একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের, একটি আইসোলেশনের। বাকিগুলির মধ্যে একটি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের, একটি চিকিৎসকদের এবং দু’টি নার্সদের জন্য। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের রাস্তা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও তা চালু না হওয়ায় উঠছে প্রশ্ন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, খুব দ্রুত চালু হবে সেটি।

বিনপুর-১ ব্লকের সদর এলাকা লালগড় বেশ জনবহুল। লালগড় ও সংলগ্ন গ্রামগুলির প্রায় ২০ হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি ব্লকের ভীমপুর ও পিড়াকাটা অঞ্চলের রোগীদের কাছেও লালগড়ের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই ভরসা। এইসব এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা আদিবাসী ও অনগ্রসর শ্রেণির। তাঁরা মূলত সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরেই নির্ভরশীল। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন চার জন চিকিৎসক রয়েছেন। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনে অন্তর্বিভাগ চালু না হওয়ায় এখানকার সঙ্কটাপন্ন রোগীদের ২০ কিলোমিটার দূরের ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা ৪২ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করতে হয়।

বৃহস্পতিবার লালগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল নতুন ভবনটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র বহির্বিভাগ চালু রয়েছে। রোগীর পরিজনের অভিযোগ, পুরনো ভবনের অন্তর্বিভাগে রাত-বিরেতে বিদ্যুতের সমস্যা হয়। সেখানে রোগীদের জন্য জলের ব্যবস্থা নেই। হাত-পা ধোয়ার জলেও ‘আয়রন’ রয়েছে। রোগীর আত্মীয়দের হাসপাতালের মূল দরজার বাইরে গিয়ে জল ভরে নিয়ে আসতে হয়। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা অবশ্য বলছেন, ‘‘নতুন ভবনে শীঘ্রই সব কিছুই স্থানান্তরিত করা হবে। সেটি চালু হয়ে গেলে কোনও সমস্যা থাকবে না। নতুন ভবনটি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lalgarh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE