Advertisement
E-Paper

তছনছ পথশ্রী-র মঞ্চ

Cap- সাম্প্রতিক কালে নানা কারণেই নন্দীগ্রামবাসীর ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগে জেলায় সব থেকে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে এই এলাকাতেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৩
ভেঙে ফেলা হয়েছে নীল-সাদা মঞ্চ। বয়ালে।

ভেঙে ফেলা হয়েছে নীল-সাদা মঞ্চ। বয়ালে।

নীল-সাদা কাপড়ে মোড়া সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ। হাজির বিডিও, জনপ্রতিনিধি-সহ অনেকেই। সেই মঞ্চই ভেঙে তছনছ করলেন গ্রামবাসী। তৃণমূল প্রধানের সামনেই চলল বিক্ষোভ।ঘটনাস্থল সেই নন্দীগ্রাম, এক দশক আগে যেখানে রাস্তা কেটে বিক্ষোভ রাজ্য রাজনীতিকেই নতুন পথে চালিত করেছিল। সোমবারের বিক্ষোভ, মঞ্চ ভাঙার পিছনেও রয়েছে বেহাল রাস্তার অভিযোগ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প ‘পথশ্রী’। এই প্রকল্পের অধীনে রাজ্য জুড়ে বেহাল সড়ক সংস্কার হচ্ছে। ক’দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রকল্পের গুণাগুণ বর্ণনা করেছেন। সোমবার নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের বয়াল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিঁদুরটিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে দীনবন্ধু প্রধানের চেম্বার পর্যন্ত একটি রাস্তা পথশ্রী প্রকল্পে পুনর্নির্মাণের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনার আয়োজন হয়েছিল। সেখানেই এ দিন গোলমাল বাধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিডিও সুরজিৎ রায় কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে চলে যেতেই কী সরঞ্জাম দিয়ে রাস্তার পুনর্নিমাণ হবে, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। জানা যায়, রাস্তাটি ইট এবং ঘেঁস দিয়ে পুনর্নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। এতেই খেপে যান গ্রামবাসী। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামা মাইতির সামনেই সরকারি মঞ্চ তছনছ করে দেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাঁচা মাল দিয়ে বারবার রাস্তা তৈরি করা হয়। এক পশলা বৃষ্টি হলেই সেই রাস্তা আর ব্যবহারের যোগ্য থাকেনা। হাতে জুতো নিয়ে পথ চলতে হয়। বহুবার গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে রাস্তাটি পাকাপোক্ত করে নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ।

পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামা মানছেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের দাবি, ঢালাই রাস্তা করতে হবে। বহু বোঝানো সত্ত্বেও তাঁরা আমার কথা শোনেননি। আমার সামনেই মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়।’’ নন্দীগ্রাম ২-এর বিডিও সুরজিৎ বলেন, ‘‘পথশ্রী প্রকল্পে কাজের সূচনা করে চলে আসার পরে একটা গন্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। ঠিক কী ঘটেছে জানা নেই।’’

সাম্প্রতিক কালে নানা কারণেই নন্দীগ্রামবাসীর ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগে জেলায় সব থেকে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে এই এলাকাতেই। তারপর একাধিক এলাকায় রাস্তা সংস্কারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে। নন্দীগ্রামের বহু বাসিন্দারই অভিযোগ, পরিবর্তনের এই মাটিতে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। উল্টে শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা ‘কাটমানি’তে পুষ্ট হয়েছেন।

আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর দলহীন জনসংযোগ চলছে। জমি আন্দোলন পর্বে নিহত নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা নিশিকান্ত মণ্ডলের স্মরণসভায় শুভেন্দু শেষ নন্দীগ্রামে এসেছিলেন। সেই আয়োজনও তৃণমূলের ছিল না, হয়েছিল জমি-রক্ষা কমিটির ব্যানারে। রাজনীতির এই আবহে এ দিন সরকারি মঞ্চ ভেঙে নন্দীগ্রামে আমজনতার বিক্ষোভ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

নন্দীগ্রামে তৃণমূলের বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল অবশ্য বলেন, ‘‘এলাকার ৮০ শতাংশ রাস্তাই হয়ে গিয়েছে। ২০ শতাংশ বাকি আছে। তবে হ্যাঁ, কিছু রাস্তা সত্যিই করা দরকার ছিল যা করা যায়নি। এলাকার মানুষের ক্ষোভও আছে।’’ এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Pathashree Nandigram TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy