Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Didi Ke Bolo

কিট নেই, থমকে ‘দিদিকে বলো’

‘দিদিকে বলো’র কিট আনতে মেদিনীপুরে এসে একাধিকবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে খড়্গপুর মহকুমার এক তৃণমূল নেতাকে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:৩৯
Share: Save:

কোন গ্রামে যেতে হবে, কার সঙ্গে দেখা করতে হবে, সেই তালিকা এসে গিয়েছে। অথচ গ্রাম-দর্শনে যেতে পারছেন না তৃণমূল নেতারা। কারণ, পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘দিদিকে বলো’র কিট বাড়ন্ত!

‘দিদিকে বলো’র কিট আনতে মেদিনীপুরে এসে একাধিকবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে খড়্গপুর মহকুমার এক তৃণমূল নেতাকে। প্রতিবারই তাঁকে শুনতে হয়েছে, ‘এখনও কিট আসেনি। এলে পেয়ে যাবেন’। ওই নেতার আক্ষেপ, ‘‘মহাবিপদে পড়েছি! নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্রামদর্শন করতে হবে। অথচ দিদিকে বলোর কিটই নেই। এরপর তো দলের বৈঠকে শুনতে হবে, আমি ফাঁকি মেরেছি।’’ তেমন হলে অন্য কোনও নেতার থেকে কিট ধার নিয়ে গ্রামদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরুর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কলকাতা থেকে কিট দেওয়া হত। তাঁরা কলকাতায় গিয়ে কিট নিয়ে আসতেন। পরে অবশ্য মেদিনীপুরেই ‘দিদিকে বলো’র কার্যালয় খোলে। কলকাতা থেকে কিট এখানে আসে। কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মেদিনীপুরের কার্যালয়ে এসে কিট নিয়ে যান। সপ্তাহ দুয়েক হল এই কার্যালয়ে কিট বাড়ন্ত। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের এক বৈঠকেই জানানো হয়েছিল, গ্রামে যাওয়ার সময় কিট নিয়ে যেতে হবে। খালি হাতে গ্রামে গেলেও তো বিপদ!’’ এক বিধায়কের স্বীকারোক্তি, ‘‘আমার আরও ২টি গ্রামে যাওয়ার কথা। কিট পাচ্ছি না বলে যেতে পারছি না।’’ ঘাটাল মহকুমার এক নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমাকে ৭টি গ্রামের তালিকা ধরানো হয়েছে। ৫টি গ্রামে কর্মসূচি সারা হয়েছে। কিট পেলেই বাকি ২টি গ্রাম যাব।’’

তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘কিট না থাকলে চলে আসবে। তবে কোথাও কর্মসূচি থমকে নেই।’’ জেলা তৃণমূলের অন্য এক নেতার ব্যাখ্যা, মকর সংক্রান্তির সময় গ্রামে গ্রামে উৎসব চলে। তাই হয়তো কোথাও কোথাও কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত থেকেছে। এ বার চালু হয়ে যাবে।’’ শুরুতে দলের বিধায়কদের এই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছিল। পরে সাংসদদের যুক্ত করা হয়। পরে পরে দলের বাছাই করা যুব নেতাদের, ব্লক সভাপতি, শহর সভাপতি, ব্লক এবং শহরের বাছাই করা নেতাদেরও এই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে।

তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, চলতি মাসের গোড়ায় দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের বিধায়ক ও বাছাই করা দলীয় পদাধিকারীদের নিয়ে কলকাতায় এক বৈঠক হয়েছে। যাঁরা ‘দিদিকে বলো’য় যুক্ত তাঁদের নিয়েই বৈঠক হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতায় ওই বৈঠকে প্রশান্ত কিশোর ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসূচিটি সাতদফায় ভাঙা হয়েছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, একাংশ নেতা সব পর্যায় পূরণ করেননি। কেউ নির্দিষ্ট এলাকায় রাতে থাকেননি, কেউ দলীয় কর্মীর বাড়িতে খাননি, কেউ দলীয় কার্যালয়ে যাননি, কেউ বা পরদিন সকালে এলাকায় দলের পতাকা না তুলেই ফিরে এসেছেন। ওই নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, গোটা কর্মসূচি নতুন করে পালন করতে হবে। সেই মতো পরে তাঁরা তা পালন করছেন।

কিন্তু কিট না পেলে কাজ এগোবে কী করে! সংশয়ে তৃণমূল নেতারাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Didi Ke Bolo TMC Kit Prashant Kishore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE