Advertisement
E-Paper

বিসর্জনে ডিজে-দাপট

রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্রই কালীপুজোর বিসর্জনের শেষ দিন ছিল। জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে ডিজে-র দাপট সে ভাবে দেখা না পেলেও পাশের শহর খড়্গপুরে একেবারে উল্টো ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৩
স্বমহিমায়: তারস্বরে ডিজে বাজাতে বাজাতেই এগোচ্ছে বিসর্জনের শোভাযাত্রা। খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

স্বমহিমায়: তারস্বরে ডিজে বাজাতে বাজাতেই এগোচ্ছে বিসর্জনের শোভাযাত্রা। খড়্গপুরের মালঞ্চ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

ডিজে নাকি নিষিদ্ধ! কিন্তু রেলশহর খড়্গপুরে কালী প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখলে তা বোঝা দায়। বেশিরভাগ পুজো কমিটির শোভাযাত্রাতেই ডিজে বক্স বেজেছে। শব্দতাণ্ডবের সঙ্গে উদ্দাম নাচে ভুগেছেন শহরবাসী।

রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্রই কালীপুজোর বিসর্জনের শেষ দিন ছিল। জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে ডিজে-র দাপট সে ভাবে দেখা না পেলেও পাশের শহর খড়্গপুরে একেবারে উল্টো ছবি। গলিপথ থেকে মূল সড়ক, যে পথেই কালী প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা এগিয়েছে, ডিজে বক্সের তাণ্ডবে কান হয়েছে ঝালাপালা। বিশেষ করে গলির মধ্যে পুকুরঘাটে যাওয়ার সময় ডিজে-তাণ্ড মাত্রা ছাড়িয়েছে। পুলিশের নাকের ডগায় ডিজে-দাপট হলেও কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও খড়্গপুর প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “আমাদের নজরে ডিজে বক্স পড়েনি। আর আমাদের কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেব।’’

মিশ্র সংস্কৃতির শহরে খড়্গপুরে বছর কয়েক ধরেই ডিজের দাপট দেখা যাচ্ছে। বিয়েবাড়ির শোভাযাত্রা থেকে পুজোর বিসর্জন, সর্বত্র ডিজের যথেচ্ছ ব্যবহার চলছে। এক-একটি শোভাযাত্রায় ৬-৮টি সাউন্ড বক্সের সঙ্গে নীল-লাল-হলুদ আলোয় রাস্তা জুড়ে উদ্দাম নাচের ছবি দেখা যাচ্ছে। অথচ এ ভাবে ডিজে বক্সের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। তবে সে সবের তোয়াক্কা না করেই কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে ব্যবহার হয়েছে। রবিবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত মালঞ্চ, কৌশল্যা, ঝাপেটাপুর, গোলবাজার, ইন্দার মূল সড়কে ডিজে বক্স-সহ শোভাযাত্রা দেখা গিয়েছে। মালঞ্চ, সুভাষপল্লি, ইন্দা, কৌশল্যা, তালবাগিচার গলিপথেও ডিজের তাণ্ড চলেছে। মালঞ্চ রোডে এক প্রবীণ বলছিলেন, “পর পর প্রতিমা বিসর্জন যাচ্ছে। স্টার ইউনিট ক্লাবের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে। তার সামনেই প্রায় প্রতিটি শোভাযাত্রায় নীল-লাল আলো-সহ কানফাটা শব্দে বক্স বাজছে।”

মালঞ্চর রোডের বেশ কয়েকটি কালীপুজো কমিটির শোভাযাত্রায় ডিজে বক্স বেজেছে বলে অভিযোগ। মালঞ্চ এলাকার স্টার ইউনিট পুজো কমিটির সম্পাদক দিনেশ দোলুই মানছেন, “প্রতিবছর যাঁকে মাইকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তিনি এ বারও না বুঝে ডিজে বক্স নিয়ে এসেছিলেন। শেষ মুহূর্তে কিছু করার ছিল না। তাই কিছু সাউন্ড বক্স কমিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়েছিল। পরে তো পুকুরঘাটে দেখলাম প্রায় সব পুজো কমিটিই ডিজে বাজিয়েছে।” তালবাগিচা সেভেন স্টার পুজো কমিটির কর্মকর্তা পিঙ্কা দেবনাথেরও স্বীকারোক্তি, “মেয়েদের আবদার ছিল। তাই ডিজে বক্স ব্যবহার করেছি। কিন্তু আওয়াজ খুব কম ছিল।” কৌশল্যাতেও দেদার বেজেছে ডিজে। যদিও স্থানীয় বন্ধু মহল ক্লাবের কর্তা জয়ন্ত দত্তের দাবি, “আমাদের বক্সগুলি দেখতে ডিজে বক্সের মতো, কিন্তু আওয়াজ জোরালো নয়। ওগুলি নকল ডিজে বক্স।”

এই অবস্থায় দিশেহারা শহরবাসী। শহরের সাংস্কৃতিক কর্মী কৃশানু আচার্য বলেন, “ডিজে বক্সের উপর নাকি নিষেধাজ্ঞা ছিল। অথচ রাস্তায় তো দেখলাম পুলিশের সামনেই ডিজে বক্স নিয়ে শোভাযাত্রা যাচ্ছে। সহ্য করা ছাড়া উপায়ই বা কী!”

Loud Speaker DJ Immersion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy