Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘চিকিত্সককে মারা ভুল হয়েছিল’, পা ধরে ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্তরা!

আর তার জেরেই বুধবার, দীপাবলির সকালে আগুনে পুড়ে গেল খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডের ওই শপিং মল।

চিকিৎসকের কাছে ক্ষমা চাইছেন রোগীর পরিজন। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসকের কাছে ক্ষমা চাইছেন রোগীর পরিজন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধর করেছিলেন কয়েকজন। সপ্তাহ কাটার আগেই ভুল ভাঙল। বুধবার সকালেই প্রহৃত বিএমওএইচ আশিস মণ্ডলের কাছে হাজির হলেন অভিযুক্তেরা। হাতে পায়ে ধরে চাইলেন ক্ষমা। এরপরই অভিযোগ তুলে নিতে উদ্যোগী হয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বেলদা থানার রসুলপুরের বাসিন্দা ছবিরঞ্জন প্রামাণিকের (৭০) মৃত্যু হয়। সর্দি,কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই দিন সকাল এগারোটা নাগাদ ভর্তি হন। রাত ন’টা নাগাদ মারা যান তিনি। চিকিৎসকের বক্তব্য ছিল, নেবুলাইজার দেওয়ার সময় মারা যান বৃদ্ধ। ঘটনার পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন পরিবারের লোকজন। কর্তব্যরত অবস্থায় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধর করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ফোন। পরদিন, শুক্রবার হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা দেখে মারধরে যুক্ত তিনজনের নামে বেলদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আশিস। শনিবার মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের বেলদা শাখার পক্ষ থেকে ঘটনার নিন্দা ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি তুলে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। গ্রামীণ চিকিৎসক সংগঠনও বিষয়টি ভাল চোখে নেয়নি। পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়।
পুলিশ সক্রিয় হতেই নরম হতে শুরু করেন অভিযুক্তেরা। হঠাৎ এ দিন সকালে হাসপাতালে এসে বিএমওএঅইচ-সহ অন্য চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে ভুল স্বীকার করেন তাঁরা। হাতে-পায়ে ধরে শুরু হয় অনুনয়, বিনয়। মৃতের ভাইপো অচিন্ত্য প্রামাণিক বলেন, ‘‘ওই দিনের ঘটনা আমাদের ভুল ছিল। চিকিৎসকের গায়ে হাত দেওয়া ঠিক হয়নি।’’ তাহলে কি চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না? অচিন্ত্যের জবাব, ‘‘উত্তেজনার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ভালভাবে চিকিৎসা করুন।’’ এই ঘটনার পর আশিসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অভিযোগ তুলে দেওয়ার জন্য ফের বেলদা থানায় জানাব। ওরা এসে ভুল স্বীকার ক্ষমা চেয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: এ বার একাকী বৃদ্ধা খুন বাগনানের গ্রামে

মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের জেলা সম্পাদক মানস কর অবশ্য বলেন, ‘‘ভুল স্বীকার করা তো আর সমাধান নয়। হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাজে বাধা ও মারধরের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে। প্রশাসনেরও সক্রিয় হওয়া দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Crime Medical Apology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE