Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফুলচাষে ক্ষতি, শঙ্কায় দুর্গাপুজো

পাঁশকুড়া ব্লকের হাউর, ঘোষপুর, চৈতন্যপুর-১ ও ২, গোবিন্দনগর ও মাইশোরা পঞ্চায়েতের ৩০টিরও বেশি গ্রামের চাষের জমি ৪-৫ ফুট জলের তলায় ডুবে গিয়েছে।

 নষ্ট: জলে জমে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রজনীগন্ধার গাছ। নিজস্ব চিত্র

নষ্ট: জলে জমে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রজনীগন্ধার গাছ। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ১২:০০
Share: Save:

একটানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে কাঁসাই ও ক্ষীরাই নদীর বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে পাঁশকুড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধান, ফুল এবং সব্জি চাষের ক্ষেত। ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে পাশের কোলাঘাট ব্লকের একাংশ।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এই দুই ব্লক প্লাবিত হওয়ায় গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ সহ বিভিন্ন ফুল চাষের ক্ষতির জেরে ফুলের জোগানে টান পড়েছে কোলাঘাট ও হাওড়ার ফুলবাজারে। ফলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ফুলের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

পাঁশকুড়া ব্লকের হাউর, ঘোষপুর, চৈতন্যপুর-১ ও ২, গোবিন্দনগর ও মাইশোরা পঞ্চায়েতের ৩০টিরও বেশি গ্রামের চাষের জমি ৪-৫ ফুট জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। ফলে আমন ধান, আনাজ চাষের পাশাপাশি রজনীগন্ধা, গাঁদা, গোলাপ, দোপাটি ফুল চাযের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে ফুল চাষের ক্ষতি হয়েছে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী ও তমলুক ব্লকে ।

কৃষি দফতরের হিসেবে, শুধুমাত্র পাঁশকুড়া ব্লকে প্রায় ১১০ হেক্টর জমির ফুলচাষ ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা -১ ও ২, সাগরবাড়, বৃন্দাবনচক এলাকার ফুলচাষ। জেলা উদ্যান পালন দফতরের হিসেবে, ১ হাজার ৪১৯ হেক্টর জমির ফুলচাষের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকে ক্ষতি সবচেয়ে বেশী। অথচ এই ব্লকই রাজ্যে ফুলের চাহিদার অন্যতম বড় জোগানদার। কিন্তু দু’টি ব্লকেই ফুলচাষের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ফুলের জোগান অনেকটাই কমেছে। ফলে বাজারে ফুলের দাম চর চর করে বাড়ছে।

হাউর গ্রামের রতন সাহু বলেন, ‘‘১৮ কাঠা জমিতে রজনীগন্ধা চাষ করেছিলাম। মাত্র ২৫ দিন আগে ফুল তুলতে শুরু করেছিলাম। প্রতিদিন ১৫-২০ কিলোগ্রাম ফুল তোলা হতো। কিলোপ্রতি দর ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। কিন্তু ক্ষীরাই নদীর জল ঢুকে জমি ডুবে গিয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে চাষ করেছিলাম। শুরুতেই বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’

সঞ্জয় সামন্তের ২ বিঘে রজনীগন্ধা ও এক বিঘে গাঁদাফুলের খেত এখন জলের তলায়। তিনি বলেন, ‘‘সপ্তাহখানেক পরেই গাঁদা ফুল তোলা শুরু হত। কিন্তু আচমকা জলে ডুবে সব গেল।’’ তিনি জানান, দুর্গাপুজোর আর মাত্র মাস দেড়েক বাকি। এ বছর পুজোর সময় বাজারে ফুল নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি রইল না। পাঁশকুড়ার ফুল ব্যবসায়ী দীপক মালের কথায়, ‘‘এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কিলোগ্রাম গাঁদার দাম ছিল ৬০ টাকা। এখন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।’’ তাঁর আশঙ্কা যেভাবে ক্ষতি হয়েছে তাতে পুজোয় চাহিদা অনুযায়ী ফুল জোগান দেওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE