Advertisement
E-Paper

গুলিবিদ্ধ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র, ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই দুষ্কৃতী ধরল পুলিশ

কথায় বলে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। তবে শহর মেদিনীপুরে গুলিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র জখম হওয়ার ঘটনায় অবশ্য তা হয়নি। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একেবারে তাড়া করে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৩
সক্রিয়: মেদিনীপুর শহরে গুলিচালনার ঘটনায় ধৃত দুই দুষ্কৃতী। রয়েছেন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও।

সক্রিয়: মেদিনীপুর শহরে গুলিচালনার ঘটনায় ধৃত দুই দুষ্কৃতী। রয়েছেন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও।

কথায় বলে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। তবে শহর মেদিনীপুরে গুলিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র জখম হওয়ার ঘটনায় অবশ্য তা হয়নি। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একেবারে তাড়া করে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল পুলিশ। একেবারে সিনেমার মতো!

বুধবার রাত সওয়া এগারোটা। রাস্তায় লোকজন কমছে। ঝাঁপ বন্ধ হচ্ছে দোকানপাটের। পুলিশ অবশ্য তখন রাস্তায়। রাত আটটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইনের অদূরে তেঁতুলতলার মাঠে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র সৌরদীপ রায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় দুষ্কৃতীদের খোঁজে মহাতাবপুরে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন কোতোয়ালি থানার সাব-ইনস্পেক্টর তরুণ দে। প্রাথমিক তদন্তেই দুষ্কৃতীদের নাম- পরিচয় ততক্ষণে তাঁর জানা হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে এ-ও খবর ছিল, দুই দুষ্কৃতী মহাতাবপুর দিয়ে খড়্গপুরের দিকে পালাবে।

তরুণবাবু সাদা পোশাকেই ছিলেন। হঠাৎ দেখেন, মোটরবাইকে দুই যুবক আসছে। চেহারা দেখে তরুণবাবু বুঝতে যান, এরাই সেই দুষ্কৃতী। এদের মধ্যে একজন আগেও তরুণবাবুর হাতেই গ্রেফতার হয়েছিল। দেরি না- করে বাইকের পথ আটকান তিনি। আর তখনই চমে উঠে দেখেন, এক দুষ্কৃতীর প্যান্টের পিছনের দিকে দু’টি পিস্তল। দুষ্কতীরা তখনও বুঝতে পারেনি যে পুলিশের জালে পড়ে গিয়েছে। কারণ, তরুণবাবু তাদের কাছে বাইকের কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলেন। একজন কাগজপত্র দেখাতে যেতেই পিস্তল দু’টি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তরুণবাবু। তখন দুষ্কতীদের একজন গুলি করার চেষ্টা করে। তারপর বাইক ফেলে পালানোরও চেষ্টা করে। তখন ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই দুষ্কৃতীকে ধরেন ওই পুলিশকর্মী।

গুলিতে জখম ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র সৌরদীপ রায় ভর্তি মেদিনীপুর মেডিক্যালে।

এরপর দূরে দাঁড়ানো টহলদারি গাড়ি থেকে নেমে ছুটে আসেন আরও কয়েকজন পুলিশকর্মী। দুই দুষ্কৃতীকে ধরে থানায় নিয়ে আসা হয়। ধৃত সৌরভ বসু এবং মনোজ ভট্টাচার্যকে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “পুলিশ যখন ধরতে যায় ওই দু’জন তখন গুলি করে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে তা পারেনি।”

কিন্তু সৌরদীপের উপর কেন গুলি চালাল এরা? তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সৌরভরা সন্ধে থেকে তেঁতুলতলার মাঠে গল্প করছিল। তখন সৌরদীপ-সহ পাঁচজন যুবক দু’টি বাইকে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। সৌরভদের দেখে সৌরদীপরা দাঁড়িয়ে পড়ে। কেন রাতে মাঠে গল্প চলছে, জানতে চায়। এ নিয়েই দু’পক্ষের বচসা বাধে। সৌরভ এবং মনোজের কাছে পিস্তল ছিল। মনোজ পিস্তল বের করে মাটিতে গুলি ছুড়ে সৌরদীপদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। সেই গুলিই ছিটকে গিয়ে সৌরদীপের পায়ে লাগে। সৌরদীপ এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিত্সাধীন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।

আরও পড়ুন: দেশের মধ্যে নারী ও শিশু পাচারের সংখ্যা সর্বাধিক পশ্চিমবঙ্গে!

ধৃত সৌরভের বাড়ি মেদিনীপুরের সুজাগঞ্জে। আর মনোজ আদতে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা। কিন্তু এখন খড়্গপুরে থাকে। পুলিশের দাবি, সৌরভরা অপরাধমূলক কাজকর্মে যুক্ত। সৌরভ আগে গ্রেফতারও হয়েছে। ধৃতদের কাছে ২টি ৯ এমএম পিস্তল, ২টি দেশি পিস্তল, বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি, ৪টি মোবাইল পেয়েছে পুলিশ। মোটরবাইকটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এরা একটা বড় অপরাধমূলক কাজ করার জন্য খড়্গপুরের দিকে যাচ্ছিল। খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে একজনকে আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়ারও কথা ছিল। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় আরও কয়েকজন ধরা পড়বে।”

—নিজস্ব চিত্র।

Bharati Ghosh Injured Student Engineering Student Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy