Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোট ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টায় ‘সরবেন’ মোদী-মমতা

রাস্তার ধারে বড় ফেস্টুন। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের প্রচার। একদিকে লেখা ‘কৃষিবান্ধব সরকার, একগুচ্ছ উপহার।’

মেদিনীপুর কালেক্টরেটে রাজ্য ( বাঁ দিকে) ও অলিগঞ্জে কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর কালেক্টরেটে রাজ্য ( বাঁ দিকে) ও অলিগঞ্জে কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৬:২৯
Share: Save:

রাস্তার ধারে বড় ফেস্টুন। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের প্রচার। একদিকে লেখা ‘কৃষিবান্ধব সরকার, একগুচ্ছ উপহার।’ পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাসিমুখের ছবি। কোথাও আবার হোর্ডিং। উজ্জ্বলা যোজনার প্রচার। রয়েছে মোদীর মুখ। একদিকে লেখা, ‘মহিলারা পেয়েছেন সম্মান, স্বচ্ছ ইন্ধন, উন্নত জীবন।’ ভোট ঘোষণার পরই সরবে এইসব সব হোর্ডিং, ফেস্টুন।

কিন্তু যে কোনও ভোটের আগেই তা হয়। এতে নতুনত্ব কী? জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, নতুন হল সময়সীমা বেঁধে দেওয়া। নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোট ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি সমস্ত জায়গা থেকে সরকারি সমস্ত প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে হবে। আর জনবহুল এলাকা থেকে সেগুলি সরাতে সময় মিলবে আর অতিরিক্ত একদিন। অর্থাৎ মোট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি এবং জনবহুল জায়গা থেকে পরিষ্কার করতে হবে সবকিছু। গত বৃহস্পতিবার নির্দেশ পৌঁচেছে জেলায়। শুক্রবার থেকে তা পাঠানো হচ্ছে প্রতি ব্লকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ওসি (ইলেকশন) দীপ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ নির্দেশিকায় রয়েছে। নির্দেশ মেনেই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

নির্দেশ পেয়েই ঘুম উড়ছে ব্লক প্রশাসনের। কারণ, গত কয়েক বছরে হোর্ডিং, ফেস্টুনের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের প্রচার বেড়েছে কয়েক গুণ। মানুষ যাতে সহজে সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পারেন সে জন্য ওই ফেস্টুন, ফ্লেক্সগুলি সরকারি অফিস ও জনবহুল জায়গাতেই দেওয়া হয়। রাজ্য এবং কেন্দ্র, দুই সরকারেরই প্রচুর প্রকল্প রয়েছে। সরিয়ে ফেলতে হবে সব।

হাতে সময় কম। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কী ভাবে সব সরানো যাবে তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়েছে ব্লক প্রশাসনে। প্রাথমিক ভাবে বহু ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে তালিকা। হাতে তালিকা থাকলে কম সময়ের মধ্যেই ফেস্টুন, ফ্লেক্স সরিয়ে ফেলা সম্ভব। এক বিডিও- র কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট করে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই সব সরকারি প্রচার সামগ্রী সরাতে হবে। তাই তালিকা তৈরি করছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ব্লকের ইতিউতি অনেক প্রচার সামগ্রী রয়েছে। কোথায় কত প্রচার সামগ্রী রয়েছে তারই তালিকা করছি। এরফলে, কাজের সুবিধে হবে। ভোট ঘোষণার পরে এই তালিকা ধরে প্রচার সামগ্রী সরানোর কাজ শুরু হবে।’’

নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ী, সরকারি জায়গার উপর দলীয় প্রচার করাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের জারি করা নিয়মকানুন মেনে চলছে কি না, তা দেখার জন্য প্রতি ব্লকে আদর্শ নির্বাচনবিধি সেল (এমসিসি) তৈরি করা হচ্ছে। ওই সেলের কর্মীরা এলাকা ঘুরে সবকিছুর উপর নজর রাখবেন। সরকারি জায়গার উপর ভোটের প্রচার দেখলেই তা ক্যামেরাবন্দি করে রাখবেন তাঁরা। সরকারি জায়গায় লাগানো পোস্টার, ফেস্টুন খুলেও ফেলবেন।

এ-ও যেন টি টোয়েন্টি ম্যাচ। সময় কম। কাজ প্রচুর। এক ঘণ্টাও নষ্ট করার সময় নেই। ঝড়ের গতিতে দুই ‘ম’-এর মুখ খুলতে কোমর বাঁধছে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE