Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ভুয়ো ডাক্তার ধরতে পরীক্ষা হবে শংসাপত্র, রেজিস্ট্রেশন

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ভুয়ো চিকিৎসক ধরতে এ বার সমস্ত প্রেসক্রিপশনের উপর চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকারি অনুমোদিত সমস্ত পলিক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ভুয়ো ডাক্তার নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য তোলপাড়। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, খড়্গপুর এবং মেদিনীপুর—তিন মহকুমা থেকেই একধিক ভুয়ো চিকিৎসকের খবর এসেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “আমরা ওই সমস্ত চিকিৎসকদের চেম্বার ও পলিক্লিনিকগুলিকে চিহ্নিত করছি। সংশ্লিষ্ট চিকিৎকদের প্রেসক্রিপশনও সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রমাণ-সহ হাতেনাতে তাদের ধরা হবে।”

আর সেই পদক্ষেপেই এ বার পলিক্লিনিক এবং চেম্বারগুলিতে আচমকা ঢুঁ মারবে স্বাস্থ্য দফতর। ভুয়ো ডাক্তারের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে এমনই সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “চলতি মাসেই অভিযান শুরু হবে। এর জন্য কমিটিও তৈরি হবে। কমিটির সদস্যরা জেলা জুড়ে চিকিৎসকদের চেম্বার ও পলিক্লিনিকে গিয়ে তাদের শংসাপত্র, রেজিস্ট্রেশন নম্বর খতিয়ে দেখবেন।” তিনি জানান, জেলা থেকে ভুয়ো ডাক্তারদের হটাতেই এই উদ্যোগ। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের আশঙ্কা রাজ্যে কমবেশি ৫০০-র বেশি ভুয়ো চিকিৎসক আছে। ইতিমধ্যেই জাল শংসাপত্র নিয়ে চাকরি ও প্র্যাকটিস করত এমন একাধিক চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সিআইডি সূত্রে খবর, রাজ্যে এখনও বহু চিকৎসক ভুয়ো শংসাপত্র নিয়ে চাকরি করছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ভুয়ো চিকিৎসক ধরতে এ বার সমস্ত প্রেসক্রিপশনের উপর চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকারি অনুমোদিত সমস্ত পলিক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, জেলার সিংহভাগ চেম্বার ও পলিক্লিনিকে বসা ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশনের উপর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখাই থাকে না। তাই পলিক্লিনিকে নতুন ডাক্তার এলে এবং যাঁরা প্র্যাকটিস করছেন সকলেরই শিক্ষাগত শংসাপত্র এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধু ভুয়ো চিকিৎসকই ধরতে নয়, অনেকেই গাড়িতে ডাক্তারদের ব্যবহৃত ‘ক্যাজুসিয়াস’ চিহ্ন ব্যবহার করেন। সে সবও নজরদারির আওতায় আনা হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, কোনও চিকিৎসকের ডিগ্রি নিয়ে সন্দেহ হলেই যে কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাঁর নাম গোপন থাকবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ঘাটাল হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘মহকুমায় একাধিক ভুয়ো চিকিৎসক প্র্যাকটিস করছে। স্বাস্থ্য দফতর একটু খোঁজ নিলেই প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এই অভিযানে কতজন ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়ে, এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE