Advertisement
E-Paper

বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০২:৪৬
 বিস্ফোরণের তীব্রতায় উড়ে গিয়েছে বাড়ির একাংশ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বিস্ফোরণের তীব্রতায় উড়ে গিয়েছে বাড়ির একাংশ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

ভরদুপুরে বাড়িতে গ্রিল এবং কাঠের কাজ করতে ব্যস্ত ছিলেন মিস্ত্রিরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ! তা শুনে পাশের রান্না ঘর থেকে ছুটে গিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। দেখেন, ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। তাতে চাপা পড়ে রয়েছেন তাঁর ছেলে। আগুনে ঝলসে গিয়েছে ওই যুবকের দেহ।

শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পশ্চিম কুশবনি গ্রামের ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সৌরভ ভুঁইয়া (২৪) নামে ওই যুবকের। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। পুলিশ সূত্রের খবর, পশ্চিম কুশবনির বাসিন্দা শশাঙ্কশেখর ভুঁইয়ার বাড়িতে এ দিন বিস্ফোরণ ঘটে। বাড়িতে মজুত রাখা নিষিদ্ধ আতস এবং শব্দবাজিতে আগুন লেগেই বিপত্তি বলে পুলিশের দাবি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শশাঙ্কশেখর নিষিদ্ধ বাজির ব্যবসা করেন। বাড়িতেও বাজি বানানো হতো। শশাঙ্কের নির্মীয়মান একতলা পাকা বাড়িতে এ দিন গ্রিল মিস্ত্রি এবং কাঠের মিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। সেখানেই ছিলেন শশাঙ্কের ছেলে সৌরভ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গ্রিল বসানোর জন্য মিস্ত্রিরা যে মেশিন ব্যবহার করছিলেন, তা থেকে আগুনের ফুলকি ঘরে মজুত রাখা বাজিতে গিয়ে পড়ে। তাতেই ঘটে বিস্ফোরণ। ওই পাকা বাড়ির পাশে একটি টালির বাড়ি রয়েছে শশাঙ্কদের। সেখানেও বাজি মজুত ছিল বলে অভিযোগ।

বাড়ি থেকে উদ্ধার পোড়া বাজি। নিজস্ব চিত্র

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, পাকা বাড়ির একটা অংশ ভেঙে পড়ে। টালির বাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়দের দাবি, বিস্ফোরণের সময় এলাকার মাটি কেঁপে উঠেছিল। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায় শব্দ। বাজির আগুনে ঝলসে যান সৌরভ। পাশাপাশি, ভেঙে পড়া দেওয়ালের নীচেও চাপা পড়ে যান তিনি। আহত হন গ্রিল মিস্ত্রি শুভঙ্কর কামিলা, সিন্টু দাস, কাঠ মিস্ত্রি পাপ্পু বেরা, শ্রীকান্ত মণ্ডল, এবং সঞ্জয় মণ্ডল। তাঁদের প্রথমে বসন্তিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে তাঁদের পাঠানো হয় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক সৌরভকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে চাপ চাপ রক্ত। ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন না শশাঙ্ক। তিনি কর্মসূত্রে উত্তর ২৪ পরগনায় গিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী অনিতা পাকা বাড়িটি থেকে প্রায় তিরিশ হাত দূরের রান্না ঘরেছিলেন। তাই তিনি রক্ষা পান। অনিতা বলেন, “কী করে বিস্ফোরণ হল বুঝতে পারছি না। রান্না করছিলাম। আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি এই অবস্থা।’’

এক প্রতিবেশী সঞ্জয় বেরা অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছে, শশাঙ্ক ১০ বছর ধরে আতসবাজির কারবার করছেন। নিষিদ্ধ বাজি মজুত করতেন। সেই বাজিতেই এ দিন বিস্ফোরণ হয়। শশাঙ্কের এক আত্মীয় সরোজ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যে বাজিও বানানো হতো। তবে বেশির ভাগই বাইরে থেকে আনা হতো।’’

ঘটনাস্থলে যান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় এবং কাঁথির এসডিপিও সৈয়দ মহম্মদ মামদাদুল হাসান। রাজনারায়ণ বলেন, ‘‘শশাঙ্ক বাইরে রয়েছেন। ব্যবসার জন্য তাঁর কোনও বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। কাজেই এটি বেআইনি বাজি কারখানা কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Explosion Death Fire Cracker Factory
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy