Advertisement
E-Paper

কম্পিউটার শিখলেই স্কুলে চাকরি

এক ছাত্রী মুন্নি মোদী বলেন, ‘‘৬০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বুধবার শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকার কথা জানতে পারি। প্রতিষ্ঠান বৈধ কি না, জানতে চাই। প্রতিষ্ঠান বৈধ না হলে টাকা ফেরত দিতে হবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৮ ০০:০৪
বিক্ষোভ: কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিক্ষোভ। খড়্গপুরের ইন্দায় বৃহস্পতিবার।  ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বিক্ষোভ: কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিক্ষোভ। খড়্গপুরের ইন্দায় বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিলেই স্কুলে চাকরি—এমনই এক ভুয়ো নির্দেশিকা ঘিরে হুলুস্থূল কাণ্ড। বুধবার সকালে খড়্গপুরে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে জড়ো হলেন আবেদনকারীরা। ফেরত চাইলেন টাকা। বিকেলে পুলিশ গিয়ে ওই প্রশিক্ষণকেন্দ্র সিল করার সময় শুরু হল বিক্ষোভও।

আবেদনকারীদের বিক্ষোভের কারণ জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের জারি করা একটি নির্দেশিকা। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কম্পিউটার ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো গ়ড়া সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। ওই ধরনের নির্দেশিকা ভুয়ো। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই নির্দেশিকা স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে প়ড়তেই এ দিন সকালে প্রায় ৪০০ ছাত্রছাত্রী খড়্গপুরের ইন্দায় ওই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের সামনে জড়ো হন। টাকা ফেরতের দাবি জানান তাঁরা। কিন্তু কে ফেরত দেবে টাকা! এদিন সকাল থেকে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কোনও আধিকারিককে দেখা যায়নি। এক ছাত্রী মুন্নি মোদী বলেন, ‘‘৬০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বুধবার শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকার কথা জানতে পারি। প্রতিষ্ঠান বৈধ কি না, জানতে চাই। প্রতিষ্ঠান বৈধ না হলে টাকা ফেরত দিতে হবে।’’

এ দিন বিকেলে পুলিশ গিয়ে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের অফিস সিল করে দেয়। পুলিশের সামনে শুরু হয় আবেদনকারীদের বিক্ষোভ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেছেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাই নথির যাতে কোনও ক্ষতি না হয় আপাতত তাই অফিস সিল করা হচ্ছে। কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে বার করে আনা হয়েছে। অভিযোগ এলে গ্রেফতার করা হবে।’’ কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ জ্যোতিকা সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সাল থেকে প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালাচ্ছি। সূত্র মারফৎ অনুমোদন পেয়েছিলাম। বলা হয়েছিল, কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এখন মনে হচ্ছে আমরাও প্রতারণার স্বীকার হয়েছি।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রের তরফে জেলার স্কুলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। একটি সরকারি নির্দেশিকা (ভুয়ো) দেখিয়ে দাবি করা হয়, পুরুলিয়া উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, শিশুশিক্ষাকেন্দ্রে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি গড়বে তারা। আবেদনকারীকে দিতে হবে ৬০ হাজার টাকা। খড়্গপুরে তিনমাসের প্রশিক্ষণপর্বে মিলবে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে। প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি। বেতন ১০ হাজার ২০০ টাকা। স্কুলশিক্ষা দফতরের অনুমান, ভুয়ো নির্দেশিকার পিছনে কোনও দুষ্টচক্রের যোগসাজশ রয়েছে। জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “হঠাৎ করে দেখলে মনেই হবে না নির্দেশিকাটি ভুয়ো। দফতরের কোনও নির্দেশিকায় যেমন বয়ান থাকে, এতেও তেমন বয়ান ছিল। মেমো নম্বরও ছিল।”

কী ভাবে বোঝা গেল ওই নির্দেশিকাটি ভুয়ো? জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘কোনও প্রকল্পের কাজ শুরু হলে তা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তুতি সারা হয়। এ ক্ষেত্রে এমন প্রকল্প চালু নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। তাই খটকা লাগে। খানিক খোঁজখবর করার পরেই জানা যায়, নির্দেশিকাটি ভুয়ো।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল মানছেন, “একটি ভুয়ো নির্দেশিকা ঘিরে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল। এ রকম কোনও নির্দেশিকা স্কুলশিক্ষা দফতর দেয়নি। বিভ্রান্তি দূর করতে জেলা থেকে এক নির্দেশিকা স্কুলে স্কুলে পাঠানো হয়েছে।”

School Computer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy