Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Pulse Oximeter

বাজারে ‘নকল’ অক্সিমিটার! উদ্বেগ চিকিৎসকদের

চিকিৎসকদের একাংশ পরামর্শ দিয়েছেন, বাড়িতেই অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য পাল্স অক্সিমিটার রাখার।

অক্সিজেনের মাত্রা ৬০। নিজস্ব চিত্র

অক্সিজেনের মাত্রা ৬০। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৭
Share: Save:

মারণ ভাইরাস করোনার অন্যতম প্রধান উপসর্গ শ্বাসকষ্ট। তাই শরীরে অক্সিজনের পরিমাণ কম হলেই চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। আর চিকিৎসকদের একাংশ পরামর্শ দিয়েছেন, বাড়িতেই অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য পাল্স অক্সিমিটার রাখার।

Advertisement

এর পরেই বাজারে যে হারে অক্সিমিটার কেনার হিডিক পড়েছে, তাতে নতুন করে ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। কারণ, বহু ক্রেতাই অভিযোগ করছেন, তাঁরা যে অক্সিমিটার কিনছেন, তাতে ভুল রিডিং আসছে। কখনো কখনো শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এতটাই কম দেখাচ্ছে, যা বাস্তবে হলে ওই ব্যক্তিকে ভ্যান্টিলেশনে রাখতে রাখতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তি দিব্যি রাস্তাঘাটে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে। অভিযোগ উঠছে, ভয়কে কাজে লাগিয়ে আসাধু ব্যবসায়ীরা ভুয়ো এবং খারাপ অক্সিমিটারও বিক্রি করতে শুরু করেছেন।

চিকিৎসকরে জানাচ্ছেন, এক জন ব্যক্তির শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ এর নীচে নামলেই তাঁর চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু হলদিয়া টাউনশিপ এলাকার এক বাসিন্দা সঙ্গে যা ঘটেছে, তাতে তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত। ওই ব্যক্তি জানাচ্ছেন, বাড়িতে পাল্স অক্সিমিটারে তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা দেখাচ্ছে ৬০। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘এক চিকিৎসককে বিষয়টি জানাই। তিনি জানান, যাঁর মাত্রা ৬০, তাঁকে অবিলম্বে ভেন্টিলেশনে যেতে হবে। আমি প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিয়মিত সাইকেল চালায়। ৬০ যদি অক্সিজেন মাত্রা হয়, তবে এটা কী করে করতে পারছি আমি।’’ হলদিয়ার বাসিন্দা সুজয় মাইতি অনলাইনে ওই যন্ত্র কিনেছিলেন। তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে আলাদা আলাদা রিডিং দেখাচ্ছে। বাধ্য হয়ে ফেরত দিয়েছি।’’

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি বাজারে ভুয়ো পালস অক্সিমিটার ছেয়ে গিয়েছে?

Advertisement

হলদিয়ার জনপ্রিয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সীতাংশু দাস এ নিয়ে বলছেন, ‘‘সরকারের অবশ্যই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত। বাজারে এই ধরনের নকল পাল্স অক্সিমিটার ছেয়ে গিয়েছে।’’ আর এক চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক বলেন, ‘‘অনেক আগে থেকেই এই যন্ত্র বাজারে আসতে শুরু করেছিল। অত্যন্ত নিম্নমানের এই যন্ত্র বাজারে ছেয়ে যাবে, তার আশঙ্কা লকডাউন শুরুর দিকেই পেয়েছিলাম। শুধু তাই নয় নকল স্যানিটাইজ়ারেও ছেয়েছে বাজার। দ্রুত এই ব্যবসায় রাশ টানা জরুরি।’’

তরুণ চিকিৎসক ওয়ালিদ হোসেনের আবার পরামর্শ, ‘‘এই পালস অক্সিমিটার বাড়িতে রাখার দরকার নেই। মানসিক চাপ বাড়বে।’’ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর মাস্টার ট্রেনার অনুপম পালধি। অনুপম বলছেন, ‘‘এই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে অনেকেই মানসিক চাপে ভুগছেন। সুতরাং মানসিক চাপ এড়াতে এই যন্ত্র ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছি।’’

অক্সিমিটারের বিক্রিতে লাগাম টানা প্রসঙ্গে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও এ রকম অভিযোগ এসেছে। কোনও রকম পরীক্ষা ছাড়ায় এরকম যন্ত্রের দেদার বিক্রি আমাদেরও ভাবাচ্ছে। বিষয়টির উপরে আমরা নজর রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.