Advertisement
E-Paper

ধান কিনতে গিয়ে বয়ে গেল বেলা

চাষিদের পাশে দাঁড়াতে সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে সরকার। জেলায় কি ধানক্রয়কেন্দ্র পর্যাপ্ত? সমবায় সমিতিগুলির ভূমিকা কেমন। ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশাসন? চাষিদের অভিযোগ গতি নেই ধান কেনার প্রক্রিয়ায়। কী বলছেন আধিকারিকেরা। এখনও কি ফড়দের দাপট আছে? প্রশাসনের তরফে প্রচার কি সন্তোষজনক? খোঁজখবর নিল আনন্দবাজার। শালবনির পিঁড়াকাটায় ধানক্রয় কেন্দ্রে এসে চরকিপাক খেয়েছেন অনিল ঘোষ। কেমন? মুরারি গ্রামের চাষি অনিলের কথায়, ‘‘সেই ২৮ ডিসেম্বর এসে নাম নথিভুক্ত করেছি। পরে চার- চারবার এসেছি। প্রতিবারই এসে শুনেছি, আজ হবে, কাল হবে। ধান আর কেনা হয় না!’’

বরুণ দে 

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
শালবনির পিঁড়াকায় ধান ক্রয় কেন্দ্রে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

শালবনির পিঁড়াকায় ধান ক্রয় কেন্দ্রে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

গতবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ বারে তা আরও বেড়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা সম্ভব হবে তো? আশ্বস্ত করছে প্রশাসন। কিন্তু চাষিদের একাংশের অভিজ্ঞতা বলছে অন্য কথা।

শালবনির পিঁড়াকাটায় ধানক্রয় কেন্দ্রে এসে চরকিপাক খেয়েছেন অনিল ঘোষ। কেমন? মুরারি গ্রামের চাষি অনিলের কথায়, ‘‘সেই ২৮ ডিসেম্বর এসে নাম নথিভুক্ত করেছি। পরে চার- চারবার এসেছি। প্রতিবারই এসে শুনেছি, আজ হবে, কাল হবে। ধান আর কেনা হয় না!’’ তাঁর কথায়, ‘‘আড়তদারেরা ধান নিচ্ছেন না। সরকারও এখানে ধান কেনা শুরু করেনি। সামনে মকর সংক্রান্তি রয়েছে। টাকা দরকার। ধান বিক্রি করতে পারছি না। মহা বিপদে পড়েছি!’’

শুধু অনিল নন, বিপাকে পড়েছেন জেলার শয়ে শয়ে চাষি। কারণ, পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্র সহায়কমূল্যে ধান কেনায় সমান গতি নেই। তা হলে মরসুমের শেষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কী ভাবে? বিশেষ করে যেখানে গতবারের চেয়ে এ বারের লক্ষ্যমাত্রা আরও বেড়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গতবার প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছিল, ২ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। পরে অবশ্য পরিস্থিতি দেখে লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়। ঠিক হয়, ২ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। খাতায় কলমে এটাই ছিল ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা। অবশ্য এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ওই সূত্র জানাচ্ছে, গত বছর জেলায় ধান কেনা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৯৯ মেট্রিক টন। ওই সূত্রে খবর, এই পরিমাণ ধান কেনা হয়েছে ৩২ হাজার ২০৩ জন চাষির থেকে। জেলায় যেখানে গ্রামীণ জনসংখ্যা ৪১ লক্ষ ৮১ হাজার ৬২৯। বেশির ভাগ পরিবারই কৃষিজীবী। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

গত বছর লক্ষ্যমাত্রা যে পূরণ হয়নি তা মানছে প্রশাসনও। জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির স্বীকারোক্তি, ‘‘গত বছর লক্ষ্যমাত্রার কিছু কম ধান কেনা হয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘এ বার এমনটা হবে না। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সব রকম চেষ্টা চলছে। এ বার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেই!’’

জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় তার সবটা কখনও সরকারি উদ্যোগে কেনা সম্ভব নয়। সরকার কেনেও না। কিছুটা কেনে। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তা মানছেন, ‘‘শিবির করে সহায়কমূল্যে ধান কেনা শুরু হলে খোলা বাজারে ধানের দাম সেই ভাবে পড়ে না। ফলে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান। অন্তত ধান বিক্রি করে কৃষকদের ক্ষতির মুখ দেখতে হয় না।’’ এ বার জেলায় সবমিলিয়ে ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। এখনও পর্যন্ত কেনা হয়েছে ৮০ হাজার মেট্রিক টন।

প্রশাসনের এক কর্তা বললেন, ‘‘যা দেখছি এ বারেও শেষের দিকে চালিয়ে খেলতে হবে।’’

Administration Rice Farmers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy