Advertisement
E-Paper

টাটকা থাকছে না গোলাপ! প্রেমদিবসের আগে গুচ্ছ ফুল হিমঘরে, কাঁটায় ‘বিদ্ধ’ দুই মেদিনীপুরের চাষিরা

এ বছর বন্যার ফলে গোলাপ চাষে খানিক ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। তার পরে আবহাওয়ার খামখেয়ালে লোকসানের মুখে চাষি এবং ব্যবসায়ীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৬

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সামনেই প্রেমের দিন। ‘প্রেমের ফুলের’ চাইদাও তুঙ্গে। কিন্তু তার পরেও সমস্যায় পড়ছেন গোলাপচাষিরা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-তে যাতে গোলাপের জোগানে ঘাটতি না-হয়, সে জন্য আগাম হিমঘরে ফুল মজুত করতে শুরু করেছেন চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। কারণ, কুয়াশা এবং ছত্রাক।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, দাসপুর, জকপুর, চন্দ্রকোনা, ডেবরা, খড়্গপুর-১ ব্লক ইত্যাদি জায়গার বিস্তীর্ণ অংশে গোলাপ চাষ হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, গোসাইবেড়, পূর্ব সাওরাবেড়িয়া, কোলাঘাট, কন্যাদিহি, বক্সিতলা, পারনাঙ্ক, হাতিশোল এলাকাতেও বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে গোলাপ ফোটান চাষিরা। বস্তুত, দুই মেদিনীপুর মিনি পোল জাতের বিশেষ গোলাপের চাষ হয়। সাদা, হলুদ এবং গোলাপি রঙের গোলাপের চাষ হলেও প্রেমের মরসুমে লাল গোলাপের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। উদ্যানপালন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, দুই মেদিনীপুরে প্রায় ৮০ কোটি ‘স্টিক’ গোলাপ উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু চাষিরা সেই ফুল মাত্র ২ থেকে ৪ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন।

চলতি মরসুমে বন্যার ফলে গোলাপ চাষে খানিক ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। তার পরে আবহাওয়ার খামখেয়ালে লোকসানের মুখে চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, বড় কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না-হলেও শীতের মরসুমে প্রায় দিনই কুয়াশার চাদরে মুড়েছিল এলাকা। এর ফলে গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। গোলাপ ফোটার আগেই গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে, ফুল শুকিয়ে পড়ে গিয়েছে। ভাল ভাবে গোলাপ ফোটেইনি।

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘শীতে ছত্রাকের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। পোকা আসতেও শুরু করেছে। প্রকৃতির খামখেয়াল এবং মাটির সমস্যার জন্য ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’-র আগে চাষিরা আগেভাগে বাগান থেকে গোলাপ তুলে হিমঘরে মজুত করতে শুরু করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দুই মেদিনীপুর থেকে মিনি পোল (গোলাপ) সরবরাহ হয়। সেগুলো তিন-চার দিন ভাল থাকে। এ ছাড়া বেঙ্গালুরু থেকে গোলাপ আমদানি হয়। সেগুলির ডাঁটা প্রায় ১৪ ইঞ্চির। জলে রাখলে ১০ দিন পর্যন্ত টাটকা থাকে। এ বার জেলার কৃষকেরা বেশ সমস্যায় পড়েছেন।’’

—নিজস্ব চিত্র।

এই মরসুমে গোলাপ চাষ নিয়ে আর একটি তথ্য দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক তামসি কোলে। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে গোলাপ চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি ‘স্টিক’। ছত্রাকের দেখা দেওয়ায় কীটনাশক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে চাষীদের। তবে ফুলের ‘লুক’ (চেহারা) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে।’’ তামসির সংযোজন, ‘‘বন্যার কারণে চাষে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।’’ একই কথা জানালেন পূর্ব মেদিনীপুর উদ্যানপালন আধিকারিক অতনু গুপ্ত। তিনি জানান তাঁর জেলায় এ বার ১০৯০ হেক্টর জমিতে গোলাপ চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৫২ কোটি ‘স্টিক’ গোলাপ। তিনি বলেন, ‘‘চাষিদের বোঝানো হচ্ছে, খোলা জায়গায় না করে পলি হাউসে গোলাপ চাষ করার জন্য। এতে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে।’’

Rose Valentine’s Day cultivation Purba Midnapore Paschim Midnapore Horticulture
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy