খড়্গপুর আইআইটির ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চন্দ্রদীপ পওয়ারের মৃত্যু হয়েছিল ২১ জুলাই। বুধবার খড়্গপুরে এসে ছেলের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করলেন শোকার্ত বাবা জয়রাম পওয়ার।
বিকেলে খড়্গপুর টাউন থানার অন্তর্গত হিজলি ফাঁড়ি থেকে ময়ানাতদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করার পরে তিনি গিয়েছিলেন আইআইটির নেহরু ভবনে। সেখানেই থাকতেন তাঁর ছেলে। সিল করে রাখা কক্ষ খোলার পরে সেখান থেকে ছেলের ল্যাপটপ ও ট্যাব সংগ্রহ করেন তাঁর বাবা। ছেলে যে সাইকেল ব্যবহার করত সেটি তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয়রাম বলেন, ‘‘ছেলের মৃত্যু নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। ছেলের পক্ষ থেকেও কোনও দিন কোনও অভিযোগ ছিল না। তাই থানাতেও কোনও অভিযোগ জানানোর নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। তাতে কী লেখা আছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে কর্তৃপক্ষ খুব সাহায্য করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ছেলের ল্যাপটপ আর ট্যাব নিয়ে যাচ্ছি। সাইকেলটি কর্তৃপক্ষকে দিয়ে বলেছি, যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের দিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে ওর ব্যবহৃত জামাকাপড় আর বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি না। সেগুলো এখানেই রেখে যাচ্ছি।’’ সহযেগিতা করার জন্য ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী, জনসংযোগ আধিকারিক গুণানন্দ ঝা ও ডিন অরুণ চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। আইআইটিতে কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ছাড়াও পুলিশও উপস্থিত ছিল।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ জুলাই রাতে খাওয়ার পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার সময়ে কোনও কারণে তা শ্বাসনালীতে আটকে যায় চন্দ্রদীপের। তাঁকে উদ্ধার করে বি সি রায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফেও বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, শ্বাসনালীতে ওষুধ আটকে যাওয়ার ফলেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল। ভিসারা পরীক্ষার জন্যেও নমুনা সংগ্রহ করে তা পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষাগারে। ওই ছাত্র যেখানে থাকতেন সেখানে এসে নমুনা সংগ্রহ করেছিল ফরেন্সিক দল।
মধ্যপ্রদেশের রাজনগরের বাসিন্দা ছিলেন আইআইটির ওই পড়ুয়া। তাঁর বাবা এক বছর ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত। তিনি নাগপুর ডিভিসনের রেলের কর্মী ছিলেন। তবে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। মৃতের দাদা বিশেষ ভাবে সক্ষম। শোকার্ত বাবা জানান, দুর্ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ চন্দ্রদীপের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তখনই ছেলে জানিয়েছিলেন জ্বর-সর্দি-কাশি হয়েছে। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ওষুধও এনেছিলেন। ওই দিন রাত ৯টা নাগাদও কথা হয়েছিল। তবে ১১টা নাগাদ ছেলের বন্ধু ফোন করে জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে অসুস্থ। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে আইআইটি থেকে মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়।