—প্রতীকী ছবি
আমপান ‘অস্বস্তি’ পিছু ছাড়ছে না শাসকদল তৃণমূলের। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার ছ’মাস বাদেও পূর্ব মেদিনীপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নাম থাকা মৎস্যজীবীরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, কারও ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে বলে ফোনে টেক্সট মেসেজ এসেছিল। কিন্তু ছ’মাস বাদেও তাঁরা সেই টাকা অ্যাকাউন্টে পাননি। কাঁথি-১ ব্লকের বগুড়ান জলপাইয়ের বাসিন্দা রঞ্জিত বর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের নৌকো ভেঙে গিয়েছিল। আংশিকভাবে সারানোর জন্য পাঁচ হাজার টাকা তমলুক ট্রেজারি থেকে পাঠানো হয়েছে বলে গত ১৮ জুন মোবাইলে মেসেজ আসে। কিন্তু পরে একাধিকবার ব্যাঙ্কের পাসবই আপডেট করিয়েও সেই টাকার দেখা মেলেনি।’’
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বাসিন্দা তথা পেশায় মৎস্যজীবী ভারত বর, সুখদেব বরেরা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের নামের তালিকায় তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল রয়েছে বলে ব্লক প্রশাসনের প্রতিলিপি জমা দিতে বলেছিল। সেই মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন কয়েক মাস আগে। কিন্তু এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা জোটেনি।
উল্লেখ্য, আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের ক্ষতি হওয়া নৌকো সারানোর জন্য আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের পাঁচ হাজার টাকা এবং সম্পূর্ণ নৌকো সারানোর জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় মৎস্য দফতর। আর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য নামের তালিকা সংগ্রহ করেছিল মৎস্য দফতর। কিন্তু সেই তালিকায় অনেকেই ভুয়ো মৎস্যজীবী হিসাবে ধরা পড়ে। তারপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন ভাবে মৎস্যজীবীদের নামের তালিকা ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে চেয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এ দিনেও ক্ষতিপূরণ না মেলায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ জমেছে মৎস্যজীবীদের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী ইউনিয়নের সভাপতি তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘এমনিতেই এ বছর সামুদ্রিক মাছ আমদানি অত্যন্ত কম হওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা সমস্যায় পড়েছেন। তার পরে ঘূর্ণিঝড়ে নৌকো ক্ষতি হয়ে গিয়েছে অনেকের। তাঁরা যদি সরকারি অনুদানের টাকা দীর্ঘ দিন বাদেও না পান, তাতে তো খুবই অসুবিধা হচ্ছে। জেলাশাসক এবং সহ-মৎস্য অধিকর্তার কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছি।’’
মৎস্যজীবীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘দু-একজনের ক্ষেত্রে সাময়িক সমস্যার জন্য নৌকো সারানোর ক্ষতিপূরণের টাকা মৎস্যজীবীরা পাননি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত মৎস্যজীবীরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাবেন।’’ বিষয়টি খোঁজ করে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক বিভু গোয়েলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy