নতুন-জীবন। শিবশঙ্কর বেরা।
কাঠের পাটাতন ধরে টানা প্রায় ৬ ঘণ্টা সমুদ্রে ভেসেছিলেন। তবে মনের জোর হারাননি। দীর্ঘদিন সমুদ্রে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা হয়েছিল জোয়ার এলে ঢেউয়ের ধাক্কায় হয়তো পাড়ের কাছে পৌঁছে যাবেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নুলিয়া ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলের লোকজন নিউ দিঘা তাঁকে উদ্ধার করেন। মঙ্গলবার দিঘা থানায় বসে মাছ ধরতে গিয়ে সমুদ্রে ভুটভুটি উল্টে কী ভাবে ডুবে গেলেন, উদ্ধারই বা হলেন কী ভাবে সে কথাই বলছিলেন ওডিশার মৎস্যজীবী শিবশঙ্কর বেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবশঙ্কর বেরার বাড়ি ওড়িশার বালেশ্বর জেলার ভোগরাই থানার নরসিংহপুরে। বছর আঠাশের শিবশঙ্কর জানান, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ তাঁরা আটজন ভুটভুটি নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। মাছ ধরে ফেরার পথে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ সুবর্ণরেখা নদীর মোহনায় ওডিশার বিচিত্রপুরের কাছে ভুটভুটিটি উল্টে যায়। ভুটভুটির মালিক মালিক বাইধর মল্লিক, মাঝি জুলিয়া দোলাই-সহ মোট আট জন ভেসে যান। প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কায় ভুটভুটিটি ভেঙে যায়। কোনওরকমে ভাঙা কাঠের পাটাতন ও প্লাস্টিক ড্রাম ধরে ভাসতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু ঢেউয়ের ধাক্কায় একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ ভাবেই কাটে যায় ৬ ঘণ্টা। শিবশঙ্করের কথায়, ‘‘ভাসতে ভাসতে শরীরে আর কোনও জোর ছিল না। ভেবেছিলাম জোয়ার এসে ঢেউয়ের ধাক্কায় হয়তো পাড়ের দিকে ভেসে যাব। তারপরেই দেখি কয়েকজন আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে পাড়ের দিকে।’’ এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ নিউ দিঘার ক্ষণিকা ঘাট থেকে সমুদ্রের ৪০০ মিটার ভিতরে একজনকে ভাসতে দেখে স্পিডবোট নিয়ে ভেসে পড়েন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কয়েকজন সদস্য ও নুলিয়া। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে আনেন। তারপরেই শিবশঙ্করের পরিচয় জানা যায়। তাঁকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার জানান, শিবশঙ্করকে উদ্ধারের বিষয়টি জলেশ্বরের এসডিপিওকে জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে তালসারি মেরিন থানাকেও। তালসারি মেরিন থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, তলিয়ে যাওয়া আট জনের মধ্যে ৬ জনকে তালসারির কাছে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বিনোদ মল্লিক নামে একজন মৎস্যজীবীর রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy