ছোট থেকে তাদের বেড়ে ওঠা সরকারি হোমে। কারও মা-বাবা নেই, কাউকে আবার উদ্ধার করে আনা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সরকারি হোমের এমনই পাঁচ কিশোরী এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তারা স্বপ্ন দেখে স্বাবলম্বী হওয়ার।
মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটি এলাকায় রয়েছে সরকারি হোম ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন’। ওই হোমের পাঁচ জন কিশোরীই রাঙামাটি কিরণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী। পরীক্ষাকেন্দ্র মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ে। হোম কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন সম্পর্কে বোন। তাদের মা-বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। দেখাশোনা করতেন প্রতিবেশী এক বৃদ্ধ। কেশিয়াড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। দু’জনেরই ইচ্ছে বড় হয়ে শিক্ষিকা হওয়ার। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আর এক জনকে পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার করেছিল প্রশাসন। সে বড় হয়ে পুলিশ হতে চায়। ঝাড়গ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া মা-বাবা হারোনো আর এক পরীক্ষার্থী হতে চায় যোগ শিক্ষিকা। বেলপাহাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা বাবা-মাকে হারানো অন্য পরীক্ষার্থী হতে চায় গোয়েন্দা আধিকারিক। ওই কিশোরীরা জানিয়েছে, পরীক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে তারা। প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষা ভাল হয়েছে। সব ক’টি পরীক্ষাই ভাল হবে বলে আশাবাদী তারা।
আরও পড়ুন:
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, ‘‘আমাদের এই হোম থেকে এই বার পাঁচ জন কিশোরী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। ওদের সমস্ত ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। ওদের ফল ভালই হবে।’’ হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখানকার আবাসিকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষকের ব্যবস্থা আছে। পড়াশোনা-সহ সমস্ত কিছুর দেখভাল করেন সুপারিনটেনডেন্ট আরতি সিংহ। তা ছাড়া হোম মাদাররাও অন্য আবাসিকদের সঙ্গে তাদের পড়াশোনায় সাহায্য করেন। পাশাপাশি থাকে সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।