—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ পরীক্ষা নিচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। ঠাকুর-দেবতা স্মরণ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকছেন অনেক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরেও চলছে পরীক্ষা। হাতিঠাকুর রীতিমতো কড়া পরীক্ষায় ফেলছে প্রশাসনকে। বিশেষ করে বন দফতরের আধিকারিক ও
কর্মীদের।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ দিনই ঝাড়গ্রাম ব্লকের পুকুরিয়া এলাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের পিছনের জঙ্গলে ছিল হাতির দল। বৃহস্পতিবার রাতে আবার ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে গোয়ালতোড়ে ঢুকেছে সাতটি হাতি। পড়শি জেলা বাঁকুড়া থেকেই গড়বেতায় ঢুকেছে সাত থেকে আটটি হাতির একটি দল। হাতিঠাকুরের মতিগতি বোঝা ভার। তাই পরীক্ষার্থীদের মতোই মনে মনে হয়তো ঠাকুর নাম জপছেন একাধিক বনকর্তা, কর্মী। ভালোয় ভালোয় পরীক্ষা উতরে গেলে হয়। রূপনারায়ণ ডিভিশনের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলছেন, ‘‘নিজের পরীক্ষা জীবনে এত চাপ মনে হয়নি। পরীক্ষার মধ্যে হাতি সামালাতে নাভিশ্বাস উঠছে।’’ ঝাড়গ্রামের এডিএফও পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরীক্ষার টেনশন আলাদা ছিল। কিন্তু এখন এই টেনশন অন্যরকম।’’ খড়্গপুরের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, ‘‘হাতি নিয়ে সবসময় টেনশন থাকি। তবে পরীক্ষার সময় তা বেশি হয়।’’
বন দফতর সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম ব্লকের পুকুরিয়া ঢোলকাট প্রণবানন্দ বিদ্যামন্দিরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল। পুকুরিয়ার পেছনের জঙ্গলে এ দিন ১২টি হাতি ছিল। এ দিন ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে মোট ২৭টি হাতি রয়েছে। ঢোলকাট প্রণবানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র আচার্য বলেন, ‘‘স্কুলের পিছনে এদিন হাতি থাকলেও সমস্যা হয়নি।’’ বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা গ্রামপঞ্চায়েতের টেঙ্গিয়া গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে হাতির দল।
খড়্গপুর ডিভিশনের কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষার্থীদের ‘নিরাপদে ঘিরে’ পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো হয়েছে। সামনে থেকেছে ‘ঐরাবত’ গাড়িটি। জঙ্গলের ছোট রাস্তা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বড় রাস্তা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে ও যাতায়াতের রাস্তায় নজর রেখেছেন বনকর্মীরা। ঝাড়গ্রামের এডিএফও পার্থ বলেন, ‘‘পুকুরিয়া এলাকায় ঐরাবত গাড়ি ছিল ও হাতি ম্যানেজমেন্ট টিম ছিল।’’
গড়বেতা ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় বন দফতরের ১১টি গাড়ি টহল দিয়েছে, ৭০ জন বনকর্মী এই কাজে যুক্ত ছিলেন। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা থেকে ২৩৫ জন পরীক্ষার্থীকে বন দফতরের গাড়িতে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁঁছে দেওয়া হয়েছে।
লালগড়ের দিক থেকে সাত হাতি বৃহস্পতিবার রাতে গোয়ালতোড় রেঞ্জের অন্তর্গত রামগড় বিটের কদমডিহার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। আবার বাঁকুড়া জেলার জয়পুরের জঙ্গল থেকে সাত-আটটি হাতির একটি দল রাতে গড়বেতায় ঢুকে শিলাবতী পেরিয়ে আমলাগোড়ার মাগুরাশোলের
জঙ্গলে ঢুকেছে। প্রস্তুতি থাকলে পরীক্ষা ভাল হওয়ায় সম্ভাবনা বেশি। তবে এ কথা বুক ঠুকে বলতে পারছেন না বনকর্মী, কর্তারা। গজরাজদের মেজাজটাই যে আসল রাজা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy