Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের মুখে রায়তি স্বত্ব, কাটল চার দশকের জমি জট

আগামী মঙ্গলবার থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই দিন স্থানীয় অন্তত পাঁচজনের হাতে তাঁদের জমির রায়তি সত্ত্বের কাগজপত্র তুলে দেবেন জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী মানছেন, ‘‘এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।’’

মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলার এই এলাকা ঘিরেই ছিল বিতর্ক। ফাইল চিত্র

মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলার এই এলাকা ঘিরেই ছিল বিতর্ক। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

জমি-সমস্যা দীর্ঘদিনের। সমস্যা মেটাতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে লোকসভা ভোটের মুখে মিটতে চলেছে সমস্যা। খাসমহলের জমির রায়তি স্বত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে মেদিনীপুর, খড়্গপুরে।

আগামী মঙ্গলবার থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই দিন স্থানীয় অন্তত পাঁচজনের হাতে তাঁদের জমির রায়তি সত্ত্বের কাগজপত্র তুলে দেবেন জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী মানছেন, ‘‘এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।’’ জমি সমস্যা পাঁচ বা দশজনের নয়। মেদিনীপুর-খড়্গপুরের লক্ষাধিক মানুষের। লোকসভা ভোটের আর বেশি দেরি নেই। তার আগে এত মানুষের কাছে জমির রায়তি সত্ত্বের কাগজপত্র পৌঁছনো সম্ভব? প্রশাসন সূত্রের স্বীকারোক্তি, সেটা সম্ভব নয়। তবে প্রক্রিয়াটা শুরু করাই বড় ব্যাপার! জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, খাসমহল এলাকায় বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা হবে। নাম নথিভুক্তি হবে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ হবে। সবদিক দেখেই স্থানীয়দের জমির রায়তি স্বত্ব দেওয়া হবে।

মেদিনীপুর, খড়্গপুরের ১,৬১৮ একর জমি রায়ত থেকে খাস হয়ে গিয়েছে। এর জেরে খাসমহলের লক্ষাধিক মানুষের মিউটেশন, জমি কেনাবেচা থেকে ঘরবাড়ি তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মেদিনীপুরের কর্ণেলগোলা, চাঁদিয়ানাবাজার, বাড়পাথর ক্যান্টনমেন্ট, কেরানিতলা এবং খড়্গপুরে খাসজঙ্গল মৌজার জমি ১৯৪৫ সালে ৩০ বছরের জন্য স্থানীয়দের লিজে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে সেই লিজের মেয়াদ ফুরোয়। আর নতুন করে লিজ দেওয়া হয়নি। মাস কয়েক আগে মেদিনীপুর সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকে সমস্যার দিকটি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়। বৈঠকে ভূমিসচিব মনোজ পন্থের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এখানে একটা খাস জমির ব্যাপার আছে। তোমরা আলোচনাতেই বিষয়গুলো ফেলে রেখে দাও। তারপর আর কাজগুলো হয় না। নেক্সট ক্যাবিনেটে যেন এটা আসে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মেদিনীপুর সফর পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে খাসমহলের জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, যে সব বাসিন্দা এই জমির দখল নিয়ে রয়েছেন, তাঁদের নামে সরকার জমির মালিকানার কাগজপত্র তৈরি করে দেবে। একেই রায়তি স্বত্ব বলা হয়। তবে বাসিন্দাদের ১৯৭৫ সাল থেকে খাজনা মিটিয়ে দিতে হবে। খাজনা মেটানোর শর্তেই জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জেলার এক ভূমিকর্তা বলেন, ‘‘সব কিছু সুষ্ঠুভাবে করার চেষ্টা হবে। আশা করব, এলাকার বাসিন্দারাও প্রশাসনের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করবেন।’’ তৃণমূল বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Land Dispute Government Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE