Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jhargram

Murder: রকি খুনে দোষী সাব্যস্ত চার

ঝাড়গ্রাম শহরের বলরামডিহি এলাকার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের তরতাজা যুবক রকি ছিলেন পেশায় নির্মাণ সরঞ্জামের ব্যবসায়ী। পরোপকারী ও বন্ধুবৎসল হিসেবে এলাকায় এক ডাকে সকলে তাঁকে চিনতেন।

সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি

সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম ও তমলুক শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৭:৩১
Share: Save:

ঝাড়গ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি অপহরণ ও খুনের মামলায় চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল পূর্ব মেদিনীপুরের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। বুধবার ওই আদা‌লতের বিচারক লোকেশকুমার পাঠক অভিযুক্ত অশোক শর্মা, তাঁর ভাইপো সুমিত শর্মা, অশোকের পরিচারক তোতন রানা ও এক আত্মীয় দীনেশ শর্মাকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

অশোক, সুমিত ও তোতনকে ভারতীয় দণ্ডবিধির অপহরণ, খুন, প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রের ধারায় এবং দীনেশ শর্মাকে প্রমাণ লোপাটের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মাকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। আগামী শুক্রবার, ১৩ মে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্তদের সাজা ঘোষণা করা হবে। ততদিন পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত চারজনকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উপ-সংশোধানাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী সৌমেনকুমার দত্ত জানান, রকিকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে অশোক শর্মা, সুমিত শর্মা, তোতন রানা ও দীনেশ শর্মাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। তবে অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মাকে আদালত এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। অভিযুক্তদের পক্ষের অন্যতম আইনজীবী শঙ্কর কারক বলেন, ‘‘মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। দোষী সাব্যস্তদের সাজা ঘোষণার পরে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

ঝাড়গ্রাম শহরের বলরামডিহি এলাকার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের তরতাজা যুবক রকি ছিলেন পেশায় নির্মাণ সরঞ্জামের ব্যবসায়ী। পরোপকারী ও বন্ধুবৎসল হিসেবে এলাকায় এক ডাকে সকলে তাঁকে চিনতেন। সেই রকিই ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল ব্যবসায়িক কাজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অপহৃত হন। মুক্তিপণ হিসেবে তিন কোটি টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। কিন্তু ওই বছর ৬ মে ওড়িশার গঞ্জামের রম্ভা এলাকায় রকির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রকির বাবা পবন আগরওয়ালের অভিযোগের ভিত্তিতে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ অপহরণ ও খুনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন ঝাড়গ্রাম থানার তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর প্রদীপ রথ। খুনের অভিযোগে ধৃত পবনের পারিবারিক বন্ধু পেশায় রেলের ঠিকাদার অশোক শর্মা ও তাঁর স্ত্রী পুনম শর্মা, অশোকের ভাইপো সুমিত শর্মা, অশোকের পরিচারক তোতন রানা ও এক আত্মীয় দীনেশ শর্মা-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম প্রথম দায়রা আদালতে চার্জগঠন হয়। কিন্তু সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতেই অভিযুক্তরা নিরাপত্তার অভাবজনিত কারণ দেখিয়ে মামলাটি অন্য আদালতে সরানোর জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় ঝাড়গ্রাম দায়রা আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের গোড়ায় মামলাটি বিচারের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের দ্বিতীয় দায়রা আদালতে স্থানান্তরিত হয়। ইতিমধ্যে অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মা হাইকোর্টের নির্দেশে শর্তাধীন জামিনে ছাড়া পেয়ে যান।

মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা-সহ চারজন গোড়া থেকেই জেলবন্দি রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জে‌লা আদালতে মামলাটির বিচার চলাকালীন ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের তরফে তদারকির দায়িত্বে ছিলেন জেলার ট্রায়াল মনিটারিং সেলের সাব ইন্সপেক্টর প্রতিভা হালদার। রকির বাবা পবন আগরওয়াল বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থায় পূর্ণ আস্থা ছিল। আট বছর অপেক্ষার পরে ন্যায় বিচার মিলল। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Tamluk Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE