মঞ্চে সায়ন্তন বসু। নিজস্ব চিত্র
শীত পড়েছে। জনসংযোগে কম্বল বিলিতে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবার গড়বেতায় তেমন এক কম্বল বিলির মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বাংলার ঘরে ঘরে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। কম্বল নিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে গজানন, অসিতরা বললেন, ‘‘কী সব আইন হচ্ছে, বিল হচ্ছে। এসব আইন টাইন, বিল টিল না হলেই ভাল হয়।’’
এ দিন গড়বেতার ময়রাকাটায় বিজেপির পক্ষ থেকে শিবির করে তিনশ গরিব মানুষকে কম্বল দেওয়া হয়। কুপন নিয়ে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়ে ছিলেন খড়কুশমা, সন্ধিপুর, আগরা, ধাদিকা, গড়ঙ্গা সহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। কম্বল দিতে হাজির ছিলেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, জেলা সভাপতি শমিত দাস, জেলা সম্পাদক মদন রুইদাস সহ বিজেপির অনেক নেতাই। সায়ন্তন, শমিত দু’জনেই নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে বলেন। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে সায়ন্তনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কাশ্মীরে আমরা ৩৭০ ধারা তুলেছি। এই রাজ্যেও মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবেন নতুন নাগরিকত্ব আইন আমরা বাংলার ঘরে ঘরে নিয়ে যাব।’’
নেতাদের বক্তৃতার পরে শুরু হল কম্বল বিলি। লাইনে দাঁড়িয়ে কম্বল নিয়ে এসে খড়কুশমার অশীতিপর গজানন দে, রঘুনাথপুরের অসিত দুলেরা যা বললেন তা মোটেই সুখকর নয় গেরুয়া শিবিরের কাছে। গজানন বলেন, ‘‘নাগরিক নিয়ে কীসব আইন টাইন হচ্ছে। এসব বিল-টিল বুঝিনি। এসব না হলেই ভাল হয়।’’ রঘুনাথপুরের পঞ্চাশোর্ধ অসিতের বাস্তভিটে বলে কিছু নেই। রেলের জায়গার উপর এক কুঠরি ঘরে স্ত্রী পুত্র নিয়ে কোনওরকমে দিন গুজরান করা অসিত কম্বল হাতে বলেন, ‘‘এইসব বিল-টিল না হলেই ভাল। আমাদের মতো অনেকেরই তো জমি জায়গা নেই। তাহলে আমরা কোথায় যাব?’’ সন্ধিপুরের ভারতী কোটাল, জেমুয়াশোলের নিতাই হেমব্রমরা নয়া আইন নিয়ে অতশত জানেন না। বিজেপি নেতাদের হাত থেকে কম্বল নিয়ে এসে তাঁরা বলেন, ‘‘বিল, আইন অতশত বুঝিনি। কাউকে যেন কোথাও পালাতে না হয়। একসঙ্গেই যেন থাকতে পারি!" শুধু তাঁরাই নন। এ দিন গড়বেতায় বিজেপি শিবিরে কম্বল নিতে আসা অনেকে জানেনই না নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিষয়টি।
তবে বিজেপি নেতারা আশাবাদী। তাঁরা নয়া নাগরিকত্ব আইন মানুষকে বোঝাতে পারবেন। এদিন সায়ন্তন মঞ্চ থেকে বলেন, "২৩ তারিখ কলকাতায় মহামিছিলে যাবেন। যাওয়ার পথ অনেকে আটকাবে। তাই এমনভাবে তৈরি হয়ে যাবেন, যাতে যারা আটকাবে তারা যেন সেখানে আটকেই থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy