Advertisement
E-Paper

যন্ত্রই সার, মেলে না ন্যাপকিন, অভিযোগ স্কুলছাত্রীদের

বছর খানেক আগে মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে বসানো হয়েছিল ওই যন্ত্র। সেখানকার ছাত্রীরাই জানাল, মাসের অধিকাংশ দিনই যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে থাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২১
মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন। নিজস্ব চিত্র

মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে ‘স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন’ বসার পর অরিত্রি, ঋতুপর্ণা ভেবেছিল মাসের ওই কয়েকটা দিন নিয়ে তাদের চিন্তা এ বার দূর হল। এখানেই তারা প্রয়োজনে ন্যাপকিন পেয়ে যাবে। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে বসানো ‘স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন’ থেকে আর মেলে না ন্যাপকিন। শুধু তাদের স্কুলেই নয়, মেশিন বসেছে এমন অনেক স্কুলেই স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। কোথাও ভেন্ডিং মেশিন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। কোথাও মেশিন থাকলেও সেখান থেকে ন্যাপকিন পাওয়া যায় না। ফলে স্কুলে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ছাত্রীদের।

ছাত্রীদের সুবিধার্থে সরকারের তরফে বিভিন্ন স্কুলে ‘স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন’ বসানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে। বছর খানেক আগে মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে বসানো হয়েছিল ওই যন্ত্র। সেখানকার ছাত্রীরাই জানাল, মাসের অধিকাংশ দিনই যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে থাকে।

বয়ঃসন্ধিকালে ঋতুকালীন সমস্যায় স্যানিটারি ন্যাপকিন জরুরি। স্কুলে দীর্ঘসময় থাকায় যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, ছাত্রীরা যাতে সহজে ন্যাপকিন পেতে পারে সে জন্য এক বছর আগে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন শিল্প সংস্থাকে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। সেইমতো চল্লিশটিরও বেশি স্কুলে বসানো হয়েছিল ওই যন্ত্র। কথা ছিল, যন্ত্রে রাখা ন্যাপকিনের প্যাকেট দশ টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করতে পারবে ছাত্রীরা।

একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসনের তরফে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনে দিয়ে রাখা হলেও, পরে আর দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল, সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যাপকিন নিতে হবে স্কুলকেই। অভিযোগ, সময়মতো ন্যাপকিন সরবরাহকারী কোনও সংস্থার দেখা মেলে না। ফলে খোলা বাজার থেকেই কিনতে হয় ন্যাপকিন। এতে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক পূর্ণেন্দু কুমার পৌরানি বলেন, ‘‘স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন জেলা প্রশাসন বসিয়ে দিলেও ন্যাপকিন নিয়ে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তার জন্য আমরা আরও স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে চাইছি। আশা করছি ওই সমস্যা মিটে যাবে।’’

সূতাহাটা ব্লকের লাবণ্যপ্রভা গার্লস হাইস্কুলে কয়েক বছর আগে বেসরকারি উদ্যোগে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছিল। সেই যন্ত্র এখন বিকল। প্রধান শিক্ষিকা কণা মণ্ডল বলেন, ‘‘মেশির সারানোর লোক পাওয়া দুষ্কর। তাই আমরা নতুন কয়েকটি ভেন্ডিং মেশিনের জন্য হলদিয়া পুরসভার কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’ মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে মেশিনে ‘আউট অফ অর্ডার’ লেখা থাকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি বাগ বলেন, ‘‘খোলা বাজার থেকে প্যাকেট কিনে মেশিনে ঢুকিয়ে রাখতে হয়। যাতে ছাত্রীরা ন্যাপকিন পেতে পারে। মেশিন খারাপ থাকলে ছাত্রীদের হাতে হাতে দেওয়া হয়।’’

হলদিয়ার বাজিতপুর সারদামণি বালিকা বিদ্যালয়ের ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনটি চালু রয়েছে বলে স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে। ছাত্রীরা সেখান থেকে ন্যাপকিনও সংগ্রহ করে। পরাণচক শিক্ষানিকেতনে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন থাকলেও তা অকেজো বলে স্কুলের শিক্ষিকারা জানিয়েছেন।

পাঁশকুড়া ব্লকের মধ্যে শুধুমাত্র হাউর নিবেদিতা গার্লস হাইস্কুলে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসেছিল। পাঁশকুড়ার যুগ্ম বিডিও শর্মিষ্ঠা কর্মকার বলেন, ‘‘ওই যন্ত্র নিয়ে সমস্যার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছিলেন। এখন তা কী অবস্থায় আছে খোঁজ নিতে হবে। যাতে সব স্কুলে ওই যন্ত্র বসানো যায় তার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ কোলাঘাটের বিডিও তাপস হাজরা বলেন, ‘‘কোলাঘাট ব্লকে কয়েকটি গার্লস স্কুলে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন চালু হয়েছিল। তবে এখন সেগুলির কী অবস্থা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

Napkins Girl Students Napkin vending machine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy