Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Gold Hub Daspur

জমি জটে থমকাল সোনার হাব

বছর তিনেক আগে খড়্গপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাসপুরে সোনার হাব গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

আন্দোলনে কঁচিকাঁচারাও। নিজস্ব চিত্র

আন্দোলনে কঁচিকাঁচারাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল     শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৭:৩১
Share: Save:

জমি জটে আপাতত থমকে গেল দাসপুরের নির্মীয়মাণ সোনার হাবের কাজ।

ওই হাবের জন্য যে জমি নির্দিষ্ট করা হয়েছে তা আদতে শ্মশানভূমি। গ্রামবাসীরাও বিভিন্ন কাজে সেই জমি ব্যবহার করেন। খেলাধুলো, দুর্গাপুজোও হয় সেখানে। তাই বিকল্প জমিতে সোনার হাব করার দাবি উঠেছিল। গ্রামবাসীরা দরবার করেছিলেন প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায়। সুরাহা না পেয়ে হাই কোর্টে যান তাঁরা। সূত্রের খবর, হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে পুরো ঘটনা তদন্ত করে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। যদি ভুলবশত শ্মশান ভূমি দেওয়া হয়, তাহলে তা সংশোধন করতেও বলা হয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী বলেন, “সোনার হাবের জমি নিয়ে গ্রামবাসীদের একাংশের কিছু অভিযোগ রয়েছে। হাই কোর্টের তরফে নির্দেশ এসেছে। নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। দ্রুতই বিষয়টি মিটে যাবে।”

বছর তিনেক আগে খড়্গপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাসপুরে সোনার হাব গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তারপরই জমি চিহ্নিতকরণ-সহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। দাসপুর-২ ব্লকের ফরিদপুর মৌজার ওই জমি চিহ্নিত হয়েছিল। এক একর আশি শতকের সেই জমি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে হস্তান্তর করা হয়। ভবন তৈরির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে সাত কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। কয়েক মাস আগে শুরু হয় কাজ।

তবে জমি নিয়ে বিতর্ক মেটেনি। গ্রামবাসীদের দাবি, যে জমিতে সোনার হাব তৈরি হচ্ছে তার একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষ ব্যবহার করছেন। জমিটির এক পাশে শ্মশান রয়েছে। খাতায় খলমে ওই জমির চরিত্র শ্মশান বলেই চিহ্নিত। জমির একাংশ খেলার মাঠ হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। দুর্গাপুজো-সহ গ্রামের অনেক অনুষ্ঠানও ওই জমিতেই হয়। তাই বিকল্প কোনও জমিতে সোনার হাব করার দাবি তোলা হয়।

গ্রামবাসীদের একাংশের আপত্তি সত্ত্বেও কেন ওই জমিই চূড়ান্ত করা হল সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। প্রশ্ন ওঠে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। ঝাঁঝ বাড়ে আন্দোলনের। আন্দোলনকারীদের পক্ষে দীনবন্ধু খাঁড়া বলেন, “আমরা সোনার হাবের বিরুদ্ধে নয়। তবে ওই জমি নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি তুলেছিলাম। সরকারি নানা দফতরে আবেদন করা হয়েছিল। তারপরেও প্রশাসনের তরফ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।”

ঘাটাল-দাসপুরে সোনার হাব গড়ার দাবি বহু পুরনো। করোনা পরিস্থিতির সময় পরিযায়ী স্বর্ণশিল্পীদের দুর্ভোগ সামনে আসার পরেই ওই হাব তৈরি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত ভিন্ রাজ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমাতেই ওই ভাবনা। হাব চালু হলে সেখানে উন্নত মাধ্যমে গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। অভিজ্ঞ কারিগরদের নজরদারিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেখানে উন্নত যন্ত্রপাতি ও সুষ্ঠ কাজের পরিবেশ পাবেন কারিগরেরা। গয়না তৈরি এবং পালিশ করার ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। আপাতত ফের কাজ শুরুর অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gold Daspur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE