Advertisement
E-Paper

পে-লোডার মেলেনি, বন্দরে আটকে জাহাজ

পে-লোডার না মেলায় থমকে জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর কাজ। তার জেরে হলদিয়া বন্দরের ৮ ও ১৩ নম্বর বার্থে মঙ্গলবার রাত থেকে আটকে ‘স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (সেল)-এর কোকিং কোল বোঝাই দু’টি জাহাজ। মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রেনের মাধ্যমে ওই দু’টি জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর কাজ শুরু করে। সাধারণত প্রথম দিকে ক্রেনের মাধ্যমেই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করা যায়। কিন্তু জাহাজ থেকে পণ্য কিছুটা নামানোর পর ক্রেনের সঙ্গে পে-লোডারের প্রয়োজন হয়। বন্দরের নিজস্ব পে লোডার নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিপ্লের কাছে পো লোডার চায় সেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রিপ্লে পেলোডার দিতে না চাওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০২

পে-লোডার না মেলায় থমকে জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর কাজ। তার জেরে হলদিয়া বন্দরের ৮ ও ১৩ নম্বর বার্থে মঙ্গলবার রাত থেকে আটকে ‘স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (সেল)-এর কোকিং কোল বোঝাই দু’টি জাহাজ। মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রেনের মাধ্যমে ওই দু’টি জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর কাজ শুরু করে। সাধারণত প্রথম দিকে ক্রেনের মাধ্যমেই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করা যায়। কিন্তু জাহাজ থেকে পণ্য কিছুটা নামানোর পর ক্রেনের সঙ্গে পে-লোডারের প্রয়োজন হয়। বন্দরের নিজস্ব পে লোডার নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিপ্লের কাছে পো লোডার চায় সেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রিপ্লে পেলোডার দিতে না চাওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়।

এ বিষয়ে ‘রিপ্লে অ্যান্ড কোম্পানি’-এর জেনারেল ম্যানেজার প্রসিত সিংহ বলেন, ‘‘আমরা বার্থ থেকে পণ্য খালসের টেন্ডার পেয়েছি। কিন্তু জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য খালাসের জন্য সেলকে পে-লোডার দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘টাকার বিনিময়ে পেলোডার দিতে আমরা রাজি। তবে আগে পে-লোডারের খরচ কে দেবে, তা ঠিক হোক।’’ আগে জাহাজ থেকে বার্থে ও বার্থ থেকে অন্যত্র পণ্য খালাসের কাজ করত বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর কাজ করে। কিন্তু বার্থ থেকে বন্দরের বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার কাজ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত আটটি বেসরকারি সংস্থা। যদিও এ বিষয়ে সেলের রিজিওনাল ম্যানেজার মানস বসু কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তাছাড়া এতদিন পণ্য খালাসের পরিমাণ অনুযায়ী বন্দরকে কোনও টাকা দিত না দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। বার্ষিক রেজিস্ট্রশন ফি-র নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিলেই চলত। নতুন নিয়মে ঠিক হয়, বার্থ থেকে বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য আমদানি বা রফতানিকারক সংস্থার থেকে প্রতি টনে ১২০ টাকা নিতে পারবে পণ্য খালাসকারী সংস্থা। এই টাকার মধ্যে প্রতি টন পণ্যের জন্য প্রায় ১৫ টাকা বন্দরকে দিতে হবে। বাকি টাকা পণ্য খালাসকারী সংস্থার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী রিপ্লে-সহ আটটি সংস্থাকে বার্থ থেকে বাইরে পণ্য খালাসের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ১ এপ্রিল থেকে এই নতুন নিয়ম কার্য়করী হওয়ার পর থেকেই জটিলতা তৈরি হয়। এতদিন হলদিয়া বন্দরে আগত অধিকাংশ জাহাজ থেকে বার্থে ও বার্থ থেকে বাইরে পণ্য খালাসের কাজ করত রিপ্লে। রিপ্লে সূত্রে খবর, ‘সেল’-এর সঙ্গে তাদের এই সংক্রান্ত চুক্তিও ছিল। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন কেবল বার্থ থেকে বাইরে পণ্য খালাসের কাজ করে রিপ্লে। ফলে ‘সেল’ জাহাজ থেকে বার্থে পণ্য নামানোর জন্য রিপ্লের কাছে পে-লোডার চাইলেও তারা তা দিতে চায়নি।

রিপ্লে-র জেনারেল ম্যানেজার প্রসিত সিংহের বক্তব্য, ‘‘গত তিন বছর ধরে আমরাই সেলের জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করছি। গত ১ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেল কর্তৃপক্ষকে পুরনো নিয়মেই কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি।’’ হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) অমলকুমার দত্ত জানান, ‘সেল’ জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের জন্য রিপ্লে-র কাছে পে-লোডার চেয়েছিল। কিন্তু ওরা পুরনো দর দিলে তবে সেলকে পেলোডার দেবে বলে জানিয়েছি। নতুন দর বেঁধে দেওয়ার পর ওরা এ ভাবে পুরনো দর চাইতে পারে না। তাই তাদের শো-কজ করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমস্যার সমাধানে অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নতুন দর অনুযায়ী পে-লোডার দিতে রাজি হয়েছে। বিষয়টি সেল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। তারা রাজি হলেই পণ্য খালাসের কাজ শুরু হবে।’’ তিনি জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা এড়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষই পেলোডার দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। শো-কজ প্রসঙ্গে রিপ্লের প্রসিতবাবু বলেন, ‘‘আমরা সেলকে পুরনো দরে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি। এ জন্য বন্দর আমাদের শো-কজ করতে পারে না। চিঠি লিখে বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’

যদিও এ দিন রাতে অমলকুমার দত্ত জানান, পণ্য খালাসের জন্য পে-লোডার নিয়ে যাওয়ার পথে বন্দরের একটি ইউনিয়নের কয়েকজন তাঁদের বাধা দেন। ফলে ওই সংস্থা পে-লোডার নিয়ে জাহাজের কাছে পৌঁছতে না পারায় পণ্য খালাসের কাজ শুরু করা যায়নি। প্রশ্ন, এ বিষয়ে তিনি কী অভিযোগ দায়ের করবেন? উত্তরে অমলবাবু বলেন, ‘‘আমরা আলোচনার মাধ্যমে জট কাটাতে শ্যামল আদককে ফোন করেছিলাম। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি।’’ উল্লেখ্য, শ্যামল আদক হলদিয়া বন্দরের আইএনটিটিইউসি নেতা। এ দিন একাধিক বার চেষ্টা করেও শ্যামলবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। পণ্য খালাসের জন্য পে-লোডার দিতে সম্মত সংস্থা ‘ফাইভ স্টার’-এর মালিক শেখ মোজাফ্‌ফর বলেন, ‘‘জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর জন্য আমরা পে-লোডার দিতে রাজি হয়েছি। কিন্তু সেল এখনও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ না দেওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘ইউনিয়ন থেকেও তাঁদের বলা হয়, ওই বার্থে অন্য সংস্থা পণ্য খালাসের কাজ করে। ‘ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়া তারা সেখানে কাজ করতে চাইছেন কেন?’’ যদিও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চাননি।

loader Port ship suvendu adhikari SAIL Amal Kumar Dutta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy