Advertisement
E-Paper

হাতে গড়া ভেন্টিলেশনে প্রাণ বাঁচল একরত্তির

হাতে তৈরি ভেন্টিলেশনে বেঁচে গেল খুদে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩০
বিপন্মুক্ত আরাধ্যা। নিজস্ব চিত্র

বিপন্মুক্ত আরাধ্যা। নিজস্ব চিত্র

গত রবিবার দুপুর তখন আড়াইটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বছর তিনেকের এক শিশুকন্যাকে শালবনি হাসপাতালে এনেছেন পরিজনেরা। আরাধ্যা ঘোষ নামে ওই শিশুকন্যার খিঁচুনি থামছে না। হাসপাতালের শিশু বিভাগে দায়িত্বে ছিলেন চিকিত্সক সৌম্যকান্তি পন্ডা। প্রমাদ গোনেন তিনি— এ তো জীবন-মৃত্যুর টানাটানি। ভেন্টিলেশন ছাড়া বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু শালবনিতে ভেন্টিলেশন কোথায়!

শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভেন্টিলেশন দূর, পোর্টেবল ভেন্টিলেটরও নেই। কাছাকাছি বলতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিসিইউ-তে ভেন্টিলেশন রয়েছে। অবশ্য মেদিনীপুরে এলেই যে সিসিইউ-তে ঠাঁই মিলবে এমন নয়। কারণ, অনেক সময়েই শয্যা খালি থাকে না। তাই আরাধ্যার প্রাণ বাঁচাতে শালবনি হাসপাতালেই ম্যানুয়াল ভেন্টিলেশন তৈরির তোড়জোড় শুরু করেন সৌম্যকান্তিবাবু।

হাসপাতালে কার্ডিয়াক মনিটর, ল্যারিঙ্গোস্কোপ ছিল। সে সব নিয়ে আসা হয়। সঙ্গে আনা হয় এন্ডোট্র্যাকিয়াল টিউব (ইটি টিউব)। এই টিউব পরিয়েই ভেন্টিলেশন দেওয়া শুরু হয়। অ্যাম্বুব্যাগের সাহায্যে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। রবিবার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল- প্রায় চব্বিশ ঘন্টা এ ভাবেই ‘ম্যানুয়াল ভেন্টিলেশন’ চলে। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করে আরাধ্যা। মঙ্গলবার সৌম্যকান্তিবাবু বলছিলেন, “মেয়েটি এখন পুরোপুরি বিপদ-মুক্ত। ওকে সুস্থ দেখে ভীষণ ভাল লাগছে। আর প্রাণ বাঁচানোই তো আমাদের কর্তব্য।’’

এর আগে ম্যানুয়াল ভেন্টিলেশনে এই শালবনি হাসপাতালেই প্রাণ বেঁচেছিল এক সর্পদষ্ট কিশোরের। এ বার প্রাণ বাঁচল এক শিশুকন্যার। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই বালিকার মৃগী রোগের সমস্যা রয়েছে। সেখান থেকেই খিঁচুনি হচ্ছিল। কিন্তু তার মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে।

গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠে, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ঝাঁ চকচকে ভবন থেকে লাভটা কী, যদি না সেখানে প্রাণ বাঁচানোর উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকে! শালবনির এই হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সও রয়েছেন প্রয়োজনের তুলনায় কম। তবে তার মধ্যেই এমন অসাধ্যসাধনে খুশি সকলেই। শালবনির বিএমওএইচ অভিষেক মিদ্যা বলেন, “ছোট্ট মেয়েটি সুস্থ হয়েছে। এটাই ভাল লাগছে।”

আরাধ্যার বাড়ি গড়বেতার বড়মুড়ায়। তার মা মনীষা ঘোষ হাসপাতালে মেয়ের শয্যাতেই রয়েছেন। চিকিৎসকেদের কাছে কৃতজ্ঞ তিনি। বলছেন, ‘‘ভর্তির সময় মেয়েটার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। ডাক্তারবাবুরা অসাধ্য সাধন করেছেন। মেয়েকে বাঁচিয়েছেন।’’

Health Child health Ventilation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy